
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: উত্তর গাজায় ভয়াবহ অভিযান চালিয়ে একে একে সমস্ত আবাসিক ভবন ও ঘরবাড়ি ধ্বংস করছে ইসরায়েলি বাহিনী। সাম্প্রতিক বিমান ও ড্রোন হামলায় পুরো অঞ্চল কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বেইত লাহিয়া, জাবালিয়া এবং বেইত হনুনসহ সীমান্তবর্তী শহরগুলোতে কোনো ঘরবাড়িই আর অক্ষত নেই।
শুধু সোমবার দিনভর হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও ৩৮৮ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি অভিযানে মোট নিহতের সংখ্যা ছুঁয়েছে প্রায় ৫৫ হাজার, আর আহত হয়েছেন ১ লাখ ২৬ হাজারেরও বেশি মানুষ।
সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে রাফাহ অঞ্চলে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর একটি ত্রাণকেন্দ্রের কাছে হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৪ জন। একইদিন গাজার মধ্যাঞ্চলেও একটি ত্রাণকেন্দ্রের সামনে গুলি চালায় ইসরায়েলি বাহিনী, যেখানে ২ জন নিহত ও ৯২ জন আহত হন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় পূর্ণমাত্রায় সামরিক অভিযান শুরু করে। প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতির পর গত ১৮ মার্চ থেকে ফের শুরু হওয়া দ্বিতীয় দফার অভিযানে মাত্র আড়াই মাসেই প্রাণ গেছে প্রায় ৪ হাজার ৬৫০ জনের।
আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও ইসরায়েল অভিযান বন্ধের কোনও ইঙ্গিত দিচ্ছে না। বরং প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন— “হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূল না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে।”
এদিকে, ইরান গোপনে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময়ের আলোচনায় জড়িত রয়েছে বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি আরও বলেন, “গাজা নিয়ে এখন একটি বড় সমঝোতার চেষ্টা চলছে, যেখানে ইরানও সম্পৃক্ত। তবে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।”
অবশ্য ইরানের ভূমিকা নিয়ে হোয়াইট হাউজ ও জাতিসংঘে ইরানের প্রতিনিধির পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এদিকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা চলমান রয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা