
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের রাজধানী তেহরানে একটি আবাসিক ভবন কমপ্লেক্সে ইসরায়েলের চালানো ভয়াবহ বিমান হামলায় অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছে ২০ শিশু। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
শুক্রবার ভোররাতে ইসরায়েল এই হামলা চালায়, যা ছিল ইরানের উপর তৃতীয় দফার আক্রমণ। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, প্রথম দফায় নিহত হয় ৭৮ জন এবং আহত হয় অন্তত ৩২৯ জন। এই হিসাব প্রকাশ করেছে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড পরিচালিত ফার্স নিউজ এজেন্সি, যার বরাতে খবর দিয়েছে তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলু।
অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়েও বেশি হতে পারে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা ৭৮ ছাড়িয়ে গেছে এবং আহত সংখ্যা পৌঁছেছে ৩৩০-এর কাছাকাছি।
এই হামলা ছিল ইসরায়েলের অন্যতম বৃহৎ সামরিক অভিযান, যার কোডনেম ছিল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’। এতে অংশ নেয় প্রায় ২০০টি যুদ্ধবিমান এবং ১০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়। লক্ষ্যস্থল ছিল ইরানের পরমাণু স্থাপনা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি, সামরিক ইনস্টলেশন ও আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিট। হামলায় ইরানের সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা ও বেশ কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানী প্রাণ হারিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক উৎস।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, “লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।” তিনি জানান, এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে ধ্বংস করা।
ইরান সরকার হামলার কঠোর প্রতিশোধের ঘোষণা দিয়েছে এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তারা জানায়, “ইসরায়েলের এই আগ্রাসনের জবাব নির্ভুল ও সময়োপযোগীভাবে দেওয়া হবে।”
এদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ওআইসি (Organisation of Islamic Cooperation – ওআইসি) সহ বিভিন্ন সংস্থা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং যুদ্ধ যেন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে।
সূত্র: আল-জাজিরা, আনাদোলু, ফার্স নিউজ এজেন্সি,