
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের দামামা বাজছে, যুক্তরাষ্ট্র আসন্ন সংঘাতে জড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সমর্থন চাইছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ঠিক এই সুযোগেই কৌশলী চাল চাললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি—কাশ্মীর নিয়ে বিশেষ বার্তা দিলেন হোয়াইট হাউজকে।
মঙ্গলবার রাতে ট্রাম্পের সঙ্গে দীর্ঘ ৩৫ মিনিটের ফোনালাপে মোদি কাশ্মীর প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ভারত কখনও কাশ্মীর ইস্যুতে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা গ্রহণ করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ডিডি নিউজে।
এর আগে ২২ এপ্রিল কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে। সেই সময় ট্রাম্প দাবি করেন, তার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি হয়েছে। কিন্তু মোদি সেই দাবি নাকচ করে জানান, এটি হয়েছে দ্বিপাক্ষিক সামরিক চ্যানেলের মাধ্যমে এবং পাকিস্তানের অনুরোধে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র যখন ভারতের সামরিক ও কূটনৈতিক সমর্থন প্রত্যাশা করছে, ঠিক তখন কাশ্মীর ইস্যুতে মোদির দৃঢ় অবস্থান ‘অপূর্ব কৌশলগত চাপে’ ফেলে দিল ট্রাম্প প্রশাসনকে। এতে বোঝা যায়, আঞ্চলিক অস্থিরতা ও বৈশ্বিক শক্তির চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে ভারত পুরনো ভূখণ্ডবাদী নীতি আরও এক ধাপ এগিয়ে নিতে চাইছে।
তবে প্রশ্ন উঠছে—ভারতের বর্তমান নেতৃত্ব যদি ‘ঐতিহাসিক মালিকানা’ ইস্যুতে কাশ্মীরের দাবিকে এভাবে দৃঢ়ভাবে তুলে ধরতে পারে, তবে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্ববঙ্গ তথা বাংলাদেশকে ‘হিন্দুদের পূর্বপুরুষদের ভূমি’ বলে যে উগ্র হিন্দুত্ববাদী মতবাদ চালু করেছে, তা বাস্তব রূপ পেতে কতটা সময় লাগবে?
বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, ভারতের দক্ষিণ এশিয়া নীতি শুধু পাকিস্তান নয়, বাংলাদেশকেও ঘিরে সুদূরপ্রসারী। ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগে ভারত যদি ভবিষ্যতে ‘আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য’, ‘ঐতিহাসিক মালিকানা’ কিংবা ‘প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতির কেন্দ্র’ বলে পূর্ববাংলা ঘিরে কোনো দাবি তোলে, তবে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।