১৫ই এপ্রিল, ২০২৫, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৬
সর্বশেষ
চাকরি বাঁচাতেই কি ভয়ংকর সিন্ডিকেটের কথায় উঠ বস করে কোচ ক্যাবরেরা? অবশেষে থলের বিড়াল বের হলো!
ঋণ দেওয়া টাকার উপর যাকাত আদায় করা কি বাধ্যতামূলক?
ধ্বংসস্তূপের নিচে এক মায়ের কান্না: গাজার বুকে অন্তঃসত্ত্বা নারীর অলৌকিক জীবনরক্ষা
জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর রবিন রাফানের নেতৃত্বে আনসার ও ভিডিপির ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধির নতুন দিগন্ত
ঈদ কার্টুনে কুকুরের ছবি ব্যবহার করে ইসলাম অবমাননার দায়ে প্রথম আলোকে ক্ষমা চাইতে হবেঃ জামায়াত আমীর
আপনি জানেন কি? মোবাইল ইন্টারনেটের অপব্যবহার আপনার কলিজার টুকরো সন্তানের মস্তিষ্ককে কিভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছে! বাঁচতে হলে জানতেই হবে..
আবারও গাজায় ‘ই/স/রাইলি হামলায় কমপক্ষে ৩৭ জন নিহত
রমনার বটমূল থেকে শেষ হলো বাংলা নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রা
বরিশাল মহানগর বিএনপিতে নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে ত্রিমুখী বিভক্তি, ঐক্যের পথ অনিশ্চিত
পহেলা বৈশাখ উদযাপন: রমনার বটমূলে এক নতুন যুগের সূচনা

ইসলামের দৃষ্টিতে মুসলিমদের জন্য বড়দিন পালন করা কি উচিত?

আওয়ার টাইমস নিউজ।

ইসলামী ডেস্ক: বড়দিন (Christmas) খ্রিস্টানদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব, যা যিশু খ্রিষ্টের জন্মদিন উদযাপন হিসেবে পরিচিত। তবে ইসলাম ধর্মে, মুসলিমদের জন্য বড়দিন পালন করা বা অন্য কোনো খ্রিস্টান ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহণ করা নিষিদ্ধ এবং এটি গুনাহ হিসেবে গণ্য হয়। কোরআন ও হাদিসের আলোকে ইসলাম ধর্মে এই বিষয়ে কী বলা হয়েছে, তা বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

কোরআন: শির্ক এবং অন্য ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহণ

ইসলামে, শির্ক (আল্লাহর সাথে অন্য কোনো সঙ্গী বানানো) একটি বড় পাপ এবং মুসলিমদের শির্ক থেকে বিরত থাকতে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোরআনে এই বিষয়ে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে:

১. শির্কের কঠোরতা:

কোরআনে আল্লাহ তায়ালা শির্ককে মাফ না করার কথা বলেছেন:

> “إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَاءُ”
(সুরা আন-নিসা, ৪:৪৮)
অর্থ: আল্লাহ কখনোই শির্ক মাফ করেন না, তবে অন্য পাপসমূহ তাঁর ইচ্ছামতো মাফ করতে পারেন।

এখানে আল্লাহ স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, শির্ক কখনোই ক্ষমা করা হবে না, এবং মুসলিমদের উচিত শির্কের পথ থেকে নিজেকে দূরে রাখা। অন্য ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহণ করা, বিশেষত কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা, শির্কের দিকে পরিচালিত করতে পারে। এই কারণে, ইসলামে অন্য ধর্মের উৎসব পালনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

২. মুসলিমদের নিজস্ব ধর্মীয় পরিচয় রক্ষা:

কোরআন মুসলিমদের নির্দেশ দিয়েছে যে তারা যেন অন্য জাতির ধর্মীয় প্রথাগুলো অনুসরণ না করে:

> “وَلَا تَكُونُوا كَالَّذِينَ تَفَرَّقُوا وَاخْتَلَفُوا مِنْ بَعْدِ مَا جَآءَهُمُ الْبَيِّنَٰتُ وَأُو۟لَـٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ عَلِيمٌ”
(সুরা আলে ইমরান, ৩:১০৫)
অর্থ: এবং তোমরা তাদের মতো হতে যেও না যারা বিভক্ত হয়েছে এবং বিতর্কিত হয়েছে, যদিও তাদের কাছে পরিষ্কার নিদর্শন এসেছিল।

এই আয়াতে মুসলিমদের একত্রিত থাকার এবং নিজেদের ধর্মীয় ঐতিহ্য ও পরিচয় বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে। অন্য ধর্মের উৎসব পালন তাদের ধর্মীয় পরিচয়ের সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে এবং এতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে।

হাদিস: নবী (সা.)-এর নির্দেশনা

ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী, কোনো মুসলিমকে অন্য ধর্মীয় উৎসব পালন করতে বা তাদের রীতিনীতিতে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয় না। নবী মুহাম্মদ (সা.) বিভিন্ন হাদিসে এর বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন:

১. মুসলিমদের জন্য ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আযহা:

নবী (সা.) বলেছেন:

> “لنا عيدان لا نحتفل إلا بهما: عيد الأضحى وعيد الفطر.”
(সহীহ মুসলিম)
অর্থ: আমাদের দুটি ঈদ আছে, আমরা শুধু সেগুলো পালন করি: ঈদ-উল-আযহা এবং ঈদ-উল-ফিতর।

এই হাদিস থেকে পরিষ্কার যে, ইসলাম শুধু দুটি ঈদ উৎসবের অনুমতি দেয়, এবং অন্য কোনো ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ।

২. অন্য ধর্মের সংস্কৃতি গ্রহণের বিরুদ্ধে সতর্কতা:

নবী (সা.) আরও বলেছেন:

> “من تشبَّه بقومٍ فهو منهم.”
(সহীহ বুখারি, হাদিস নং ৩৫৫৭)
অর্থ: যে ব্যক্তি কোনো জাতির (ধর্মীয়) সংস্কৃতি অনুসরণ করে, সে তাদেরই অংশ হয়ে যায়।

এই হাদিসের মাধ্যমে নবী (সা.) মুসলিমদের সতর্ক করেছেন যে তারা যেন অন্য ধর্মের সংস্কৃতি বা উৎসব গ্রহণ না করে, কারণ এটি তাদের ইসলামিক পরিচয়ের সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে।

ইসলামের মূলনীতি এবং বড়দিন:

ইসলামে ধর্মীয় উৎসবগুলো নির্দিষ্ট করা হয়েছে, যেমন ঈদ-উল-ফিতর, ঈদ-উল-আযহা, এবং অন্যান্য ইসলামী দিন, যা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.) কর্তৃক নির্ধারিত। অন্য ধর্মের উৎসব যেমন বড়দিন পালন করা ইসলামী বিধান অনুযায়ী সঠিক নয়, কারণ এটি ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস ও পদ্ধতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। খ্রিস্টানদের বড়দিন, যিশু খ্রিষ্টের জন্মদিন উদযাপন, মুসলিমদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ এটি ইসলামের মূল বিশ্বাসের বিরোধী।

কোরআন ও হাদিসের আলোকে, বড়দিন পালন করা মুসলিমদের জন্য নিষিদ্ধ এবং এটি একটি গুনাহ হিসেবে গণ্য হয়। ইসলামে আল্লাহর সাথে কোনো সঙ্গী বানানো বা অন্য ধর্মের উৎসবে অংশগ্রহণ করা শির্কের শামিল হতে পারে, যা ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী গুরুতর পাপ।

মুসলিমদের উচিত তাদের ধর্মীয় পরিচয় রক্ষা করা এবং ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা। ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আযহা মুসলিমদের জন্য সবচেয়ে বড় উৎসব এবং তাদের উচিত এই দিনগুলোকে আন্তরিকভাবে পালন করা, অন্য কোনো ধর্মীয় উৎসব থেকে বিরত থাকা।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

ফেসবুক পেজ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

Archive Calendar
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০  

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত