
আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: ভারতের লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ইসলাম একটি আধুনিক ও উদার নৈতিক ধর্ম। বুধবার লোকসভায় উপস্থাপিত ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, এই বিল মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার লঙ্ঘন করবে।
তিনি উল্লেখ করেন, ইসলামে নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে প্রবেশের কোনো বাধা নেই। কিন্তু কেন্দ্রের প্রস্তাবিত ওয়াকফ সংশোধনী বিল মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, এই বিল শুধুমাত্র মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অধিকার খর্ব করছে না, বরং রাজ্যের ক্ষমতাও সীমিত করছে। তিনি এই বিলকে সংবিধানবিরোধী আখ্যা দিয়ে দাবি করেন, এটি মুসলিমদের ধর্মীয় সম্পত্তি রক্ষার অধিকার খর্ব করার উদ্দেশ্যে আনা হয়েছে।
সংবিধানের ২৬ নম্বর ধারা উল্লেখ করে কংগ্রেস নেতা বলেন, ওয়াকফ একটি ধর্মীয় ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান, যার মালিক আল্লাহ। সুতরাং মুসলিম সম্প্রদায়ের উচিত নিজেদের ধর্মীয় বিষয় পরিচালনা করার পূর্ণ অধিকার ভোগ করা। তিনি দাবি করেন, এই বিল সংবিধানের ২৬ নম্বর ধারার পরিপন্থী।
তিনি আরও বলেন, হিন্দু আইন ব্রিটিশ আইনের ভিত্তিতে গঠিত হলেও মুসলিম আইন কোরআন ও নবীর নির্দেশ অনুসারে চলে।
তৃণমূল কংগ্রেস নেতার মতে, তার দল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করছে। তিনি বলেন, “আমার বক্তব্যের মূল কথা হলো – তুমি হিন্দু বা মুসলিম নও, তুমি মানুষ হও।”
সংসদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, ওয়াকফ সম্পত্তি মুসলিমদের ধর্মীয় বিশ্বাসের অংশ। এটি কেবল ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, বরং ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামে জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য ইমামের নেতৃত্ব প্রয়োজন, তবে ব্যক্তিগতভাবে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রেও কোনো বাধা নেই।
তিনি বলেন, যখন একজন ব্যক্তি মসজিদে নামাজ আদায় করেন, তখন সেই মসজিদটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায় এবং ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। মসজিদের সম্পত্তি ধর্মীয় কারণে উৎসর্গ করা হয় এবং এটি আল্লাহর সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।
সংসদে ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত থাকলেও বিরোধীরা এই বিলকে মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিপন্থী বলে মনে করছেন।