১৫ই এপ্রিল, ২০২৫, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৬
সর্বশেষ
ঋণ দেওয়া টাকার উপর যাকাত আদায় করা কি বাধ্যতামূলক?
ধ্বংসস্তূপের নিচে এক মায়ের কান্না: গাজার বুকে অন্তঃসত্ত্বা নারীর অলৌকিক জীবনরক্ষা
জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর রবিন রাফানের নেতৃত্বে আনসার ও ভিডিপির ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধির নতুন দিগন্ত
ঈদ কার্টুনে কুকুরের ছবি ব্যবহার করে ইসলাম অবমাননার দায়ে প্রথম আলোকে ক্ষমা চাইতে হবেঃ জামায়াত আমীর
আপনি জানেন কি? মোবাইল ইন্টারনেটের অপব্যবহার আপনার কলিজার টুকরো সন্তানের মস্তিষ্ককে কিভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছে! বাঁচতে হলে জানতেই হবে..
আবারও গাজায় ‘ই/স/রাইলি হামলায় কমপক্ষে ৩৭ জন নিহত
রমনার বটমূল থেকে শেষ হলো বাংলা নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রা
বরিশাল মহানগর বিএনপিতে নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে ত্রিমুখী বিভক্তি, ঐক্যের পথ অনিশ্চিত
পহেলা বৈশাখ উদযাপন: রমনার বটমূলে এক নতুন যুগের সূচনা
হজ পারমিট ছাড়া মক্কায় প্রবেশে কঠোর নিষেধাজ্ঞা

নিজের ঘরে পরবাসী: ফিলিস্তিনের শত বছরের হারানো ইতিহাস

আওয়ার টাইমস নিউজ।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অটোমান সাম্রাজ্য ১৫০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯১৭ সাল পর্যন্ত তুরস্কের নেতৃত্বে বিশাল অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত ছিল। এই সাম্রাজ্য মক্কা, মদিনা, সিরিয়া, মিশর, এবং ফিলিস্তিনসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন এলাকা শাসন করেছিল। ফিলিস্তিন ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় অবস্থিত।

অটোমান সাম্রাজ্যের শাসনামলে ফিলিস্তিনের কোন নির্দিষ্ট প্রশাসনিক নাম ছিল না। এর বদলে, এটি একটি বৃহত্তর প্রশাসনিক বিভাগ হিসেবে গণ্য করা হতো, যা “শাম” নামে পরিচিত অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত ছিল। শাম অঞ্চলের অধীনে ফিলিস্তিনের বিভিন্ন শহর যেমন, জেরুজালেম, হায়ফা, গাজা, এবং নাবলুস প্রশাসনিক কাঠামোর অংশ ছিল।

ফিলিস্তিনের প্রশাসন ছিল জেরুজালেম শহরের অধীনে, যা অটোমানদের একটি “সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় কেন্দ্র” হিসেবে কাজ করেছিল। তবে, এটি কখনোই একটি আলাদা রাষ্ট্র বা ভূখণ্ড হিসেবে প্রশাসনিকভাবে আলাদা ছিল না, বরং এটি বৃহত্তর “শাম” অঞ্চলের অংশ ছিল।

অটোমান শাসনামলে ফিলিস্তিনের অর্থনৈতিক অবস্থা তুলনামূলকভাবে শান্তিপূর্ণ ছিল। কৃষি কাজ, বিশেষ করে ধান, তামাক এবং গাছের চাষ, এই অঞ্চলের অর্থনীতির মূল ভিত্তি ছিল। পাশাপাশি, সমুদ্রতীরবর্তী এলাকার মাছ ধরার শিল্পও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অটোমানরা ফিলিস্তিনের তেল আবদ্ধ শহরগুলিরও ব্যবসা প্রবাহে সাহায্য করেছিল।

ফিলিস্তিনের শহরগুলো ছিল বেশ শান্তিপূর্ণ এবং তখনকার সময়ের নানা জাতি—মুসলিম, খ্রিস্টান এবং ইহুদিরা একসঙ্গে এখানে বাস করত। বিশেষ করে, জেরুজালেম ছিল একটি ধর্মীয় শহর, যেখানে মুসলিম, খ্রিষ্টান ও ইহুদিরা নিজেদের ধর্মীয় স্থানগুলি পূর্ণ শ্রদ্ধার সাথে সম্মান করত।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর অটোমান সাম্রাজ্য পতন ঘটলে ১৯১৭ সালে ফিলিস্তিন ব্রিটিশদের শাসনাধীনে চলে যায়। ১৯১৭ সালে ব্রিটেন কর্তৃক ঘোষিত বালফোর ঘোষণা এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনে একটি “ইহুদিদের জাতীয় আবাসভূমি” প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা পরবর্তী সময়ে ইসরাইলের জন্মের পটভূমি তৈরি করে।

অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর, ফিলিস্তিন আর প্রশাসনিকভাবে আলাদা ছিল না। এর নাম পরিবর্তিত হয়ে “প্যালেস্টাইন” হয়ে যায়, যা পূর্বে আরবি শব্দ “ফিলিস্তিন” থেকে এসেছে। তবে, ব্রিটিশরা যখন এই অঞ্চলটি শাসন করতে শুরু করলো, তারা ফিলিস্তিনের বিভিন্ন অংশকে নতুনভাবে বিভক্ত করে এবং এর প্রশাসনিক কাঠামো পুনর্গঠন করল।

ব্রিটিশ শাসনামলের পর, ১৯৪৮ সালে ইসরাইল রাষ্ট্রের জন্মের পর, ফিলিস্তিনের ভূমি দখল হয়ে যায় এবং তার পরবর্তী সময়ে ফিলিস্তিনের নাম কেবল ভূখণ্ডের বা রাজনৈতিক সীমারেখার একটি প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়।

আজকের দিনে, ফিলিস্তিন অঞ্চলের নাম পরিবর্তন হয় না, তবে এটি রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত এবং আইনি সীমারেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। বর্তমানে, পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকা ফিলিস্তিনের মূল অংশ হিসেবে পরিচিত।

অটোমান সাম্রাজ্যের শাসনামলে ফিলিস্তিনের প্রশাসনিক কাঠামো ছিল ভিন্ন, এবং এর নামও ছিল “শাম” অঞ্চলের একটি অংশ হিসেবে। ব্রিটিশ শাসনামলের পর, ফিলিস্তিন নামটি রাষ্ট্রীকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়, যদিও এই ভূখণ্ডটি রাজনৈতিক দখলদারিত্বের অধীনে চলে যায়। ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে ফিলিস্তিন নামের গুরুত্ব আরও বাড়ে, তবে আজও এটি দখল, সংগ্রাম এবং স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় জড়িত একটি জাতির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

ফেসবুক পেজ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

Archive Calendar
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০  

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত