
আওয়ার টাইমস নিউজ।
লাইফস্টাইল: কাঁচা লবণ, যা সাধারণত অপরিশোধিত বা পাহাড়ি লবণ নামে পরিচিত, এটি প্রকৃতি থেকে সরাসরি সংগৃহীত একটি খনিজ পদার্থ। আয়োডিন যুক্ত পরিশোধিত লবণের তুলনায় এতে খনিজ উপাদান বেশি থাকলেও, নিয়মিত ব্যবহারে কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কাঁচা লবণের সম্ভাব্য উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিকগুলো।
কাঁচা লবণের উপকারিতা:
১. প্রাকৃতিক খনিজের ভাণ্ডার:
কাঁচা লবণ আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, জিঙ্কসহ নানা ধরনের খনিজে সমৃদ্ধ, যা শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমে সহায়ক।
২. হজমে সহায়তা:
অনেকেই মনে করেন, কাঁচা লবণ অল্প পরিমাণে খেলে পাচনতন্ত্র সক্রিয় হয় এবং হজম শক্তি বাড়ে। এটি লালা নিঃসরণ ও হজম এনজাইম তৈরিতে সাহায্য করতে পারে।
৩. ডিটক্সিফিকেশনে সহায়ক:
কিছু আয়ুর্বেদিক ও প্রাকৃতিক চিকিৎসা মতে, কাঁচা লবণ পানিতে গুলে খেলে দেহের টক্সিন বাইরে বের হতে পারে।
৪. ত্বকচর্চায় ব্যবহার:
গরম পানিতে কাঁচা লবণ মিশিয়ে গোসল করলে ত্বক সতেজ হতে পারে এবং হালকা ইনফেকশন বা এলার্জিতেও উপকার পাওয়া যেতে পারে।
৫. গলার সমস্যা উপশমে:
গরম পানিতে কাঁচা লবণ দিয়ে গার্গল করলে গলা ব্যথা বা প্রদাহ কমতে পারে।
কাঁচা লবণের অপকারিতা:
১. আয়োডিনের ঘাটতি:
কাঁচা লবণে প্রাকৃতিকভাবে আয়োডিন কম থাকে, যা নিয়মিত ব্যবহারে শরীরে আয়োডিনের অভাব সৃষ্টি করতে পারে। ফলে থাইরয়েড সংক্রান্ত সমস্যা, গলগন্ড (গয়টার) বা মানসিক বিকাশে সমস্যা হতে পারে, বিশেষ করে শিশু ও গর্ভবতী নারীদের মধ্যে।
২. রক্তচাপ বৃদ্ধির ঝুঁকি:
অতিরিক্ত লবণ, বিশেষ করে কাঁচা লবণ খেলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে। এটি কিডনি, হৃদযন্ত্র ও রক্তনালীর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
৩. অপরিশোধিত মানের কারণে সংক্রমণ ঝুঁকি:
কাঁচা লবণ যথাযথভাবে প্রক্রিয়াজাত না হলে তাতে মাটি, ধূলা বা অন্যান্য অশুদ্ধ উপাদান থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকতে পারে।
৪. অতিরিক্ত খনিজের ভারসাম্যহীনতা:
এতে থাকা খনিজ উপাদানগুলো যদি মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করা হয়, তবে শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে।
বিশেষ পরামর্শ:
সাধারণ রান্নায় আয়োডিনযুক্ত পরিশোধিত লবণ ব্যবহারের পাশাপাশি মাঝে মাঝে কাঁচা লবণও অল্পমাত্রায় ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া প্রতিদিন কাঁচা লবণ গ্রহণ করা উচিত নয়, বিশেষ করে যারা উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি সমস্যা বা থাইরয়েড রোগে ভুগছেন।
প্রসঙ্গত: প্রকৃতি আমাদের অনেক উপকারী উপাদান দেয়, তবে তা সঠিকভাবে ব্যবহার না করলে বিপরীত প্রভাব ফেলতেও সময় লাগে না। কাঁচা লবণ ঠিক তেমনই—একদিকে যেমন উপকার আছে, অন্যদিকে আছে কিছু সতর্কতা। সঠিক জ্ঞান ও সচেতনতাই হতে পারে স্বাস্থ্য সুরক্ষার চাবিকাঠি।