
আওয়ার টাইমস নিউজ।
রাজনীতি: বরিশাল মহানগর বিএনপিতে চলমান নেতৃত্ব সংকট এখন তীব্র আকার ধারণ করেছে। দলীয় নেতৃত্বের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের ফলে সংগঠনটি তিনটি পৃথক গ্রুপে ভাগ হয়ে পড়েছে।
একদিকে রয়েছেন বর্তমান আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক ও সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার। অপরদিকে রয়েছেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিনের অনুসারীরা। তৃতীয় অংশটি নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির জাহিদ, যাঁর সঙ্গে রয়েছেন বিএনপির সাবেক নেতাকর্মী এবং মজিবর রহমান সরোয়ারের অনুসারীরা।
২০২৪ সালের শেষদিকে কেন্দ্র থেকে বরিশাল মহানগর কমিটির পূর্ণাঙ্গ গঠন ও সম্মেলনের নির্দেশনা আসে। তবে ৯০ দিনের মধ্যে সম্মেলন সম্পন্ন করার কথা থাকলেও নেতৃত্ব নিয়ে মতানৈক্যের কারণে কাজ এগোয়নি। ওয়ার্ড কমিটি ভেঙে নতুনভাবে গঠনের প্রস্তাব ঘিরে দুই পক্ষের বিরোধ প্রকট হয়ে ওঠে।
সমঝোতার চেষ্টা হিসেবে ঢাকায় একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যার নেতৃত্বে ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু। যদিও এসব বৈঠকে মৌখিকভাবে সম্মতি মিললেও বাস্তবে অগ্রগতি হয়নি।
আফরোজা নাসরিনের অভিযোগ, বর্তমান কমিটির একচেটিয়া সিদ্ধান্ত এবং স্বচ্ছতার অভাবই কোন্দলের মূল কারণ। তিনি জোর দিয়ে বলেন, কাউন্সিল ছাড়া কোনো কমিটি গঠন মানা হবে না।
বর্তমান কমিটির দাবি, সংগঠনে কোনো কোন্দল নেই এবং সবকিছু নিয়ম অনুযায়ী চলছে। তারা আশাবাদী, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী পরিস্থিতি সমাধান হবে।
অন্যদিকে মীর জাহিদুল কবির জাহিদ মনে করেন, দলের মূল সমস্যা হলো ত্যাগী নেতাকর্মীদের উপেক্ষা ও অনুপ্রবেশকারীদের গুরুত্ব দেওয়া। তিনি জানান, বরিশাল বিএনপির দীর্ঘদিনের কর্মী-নেতারা এই কারণে একত্র হয়ে আবার মাঠে সক্রিয় হয়েছেন।
দীর্ঘদিন বরিশালের নেতৃত্বে থাকা মজিবর রহমান সরোয়ারের অনুসারীদের দুই দফায় কমিটি থেকে বাদ পড়াও বড় একটি কারণ হয়ে উঠেছে বর্তমান বিভাজনের পেছনে।
ফলাফলস্বরূপ বরিশাল মহানগর বিএনপি কার্যত তিনভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। নেতৃত্ব সংকট কাটিয়ে ঐক্য গঠন হবে কি না—তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। ফলে মাঠপর্যায়ের কর্মীদের মধ্যে হতাশা ও দ্বিধা তৈরি হচ্ছে।
এই অবস্থায় দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে প্রয়োজন দ্রুত, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক কাউন্সিল, যা সকল পক্ষের সম্মতি এবং আস্থা অর্জনে সহায়ক হবে।