
আওয়ার টাইমস নিউজ।
ইসলামী ডেস্ক: ইসলামে যাকাত এমন একটি ইবাদত, যা ধনীদের অর্থের মধ্যে দরিদ্রদের হক প্রতিষ্ঠিত করে। এটি কেবল ইবাদতের মাধ্যম নয়, বরং সমাজে অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার অন্যতম উপায়। তবে অনেকেই দ্বিধায় থাকেন— কারো কাছে টাকা ধার দেওয়া থাকলে, সে টাকার উপর যাকাত দিতে হবে কি না?
কুরআনের আলোকে নির্দেশনা:
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা কুরআনে বলেন—
وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ
“তোমরা নামাজ কায়েম কর এবং যাকাত আদায় কর।”
— সূরা আল-বাকারা: ৪৩
এই আয়াতটি যাকাত আদায়ের আবশ্যিকতাকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।
নবিজির বাণী:
হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন—
“فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللَّهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً فِي أَمْوَالِهِمْ، تُؤْخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ وَتُرَدُّ عَلَى فُقَرَائِهِمْ”
“তাদের জানিয়ে দাও, আল্লাহ তাদের সম্পদে সদকা (যাকাত) ফরজ করেছেন, যা তাদের ধনীদের কাছ থেকে গ্রহণ করা হবে এবং দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।”
— সহিহ বুখারী: হাদিস ১৩৯৫
ইসলামী স্কলারগণ একমত যে, যদি কেউ কারো কাছে টাকা ধার দেয় এবং সেই অর্থ ফেরত পাওয়ার বাস্তব সম্ভাবনা থাকে, তবে সেটি তার সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে। এমন ক্ষেত্রে ঋণদাতা ব্যক্তি প্রতি বছর সেই টাকার যাকাত আদায় করতে বাধ্য। যদি দীর্ঘদিন পর ঋণ ফেরত আসে, তখন পুরোনো বছরগুলোর যাকাত একসাথে আদায় করতে হবে।
কিন্তু যদি টাকার আদায় অনিশ্চিত হয়?
যদি ধার নেওয়া ব্যক্তি নিখোঁজ হয়, অস্বীকার করে বা খুব দুর্বল আর্থিক অবস্থায় থাকে— তাহলে স্কলারদের মতে যাকাত আদায় স্থগিত রাখা যায়। পরবর্তীতে টাকা আদায় করা গেলে, তখন যাকাত হিসাব করে পরিশোধ করতে হবে।
পরামর্শ: আপনার ব্যক্তিগত অবস্থার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অভিজ্ঞ আলেম বা মুফতির পরামর্শ নেওয়াই উত্তম।