
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মাত্র ক’দিন আগেই ইতিহাস গড়েছিল স্বর্ণের বাজার। প্রতি আউন্সে ছুঁয়েছিল রেকর্ড ৩,৫০০ ডলার! অথচ আজ সেই দামই পড়তে শুরু করেছে চোখে পড়ার মতো হারে। বিশ্ব অর্থনীতির পালাবদলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিনিয়োগকারীরা এখন বড় এক প্রশ্নের সামনে—এই পতনের মানে কী? সামনে কি ধেয়ে আসছে আরও বড় বিপর্যয়, নাকি এটি নতুন এক উচ্চতার আগাম ইশারা?
বিশ্ববাজারে ১ মে স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম নেমে এসেছে প্রতি আউন্স ৩,২২২.৬৬ ডলারে, আর ফিউচার মার্কেটে ৩,২৩০.৮০ ডলারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, একাধিক কারণ একসঙ্গে কাজ করছে এই দরপতনের পেছনে—
ডলারের শক্তিশালী অবস্থান: মার্কিন ডলার সূচক (DXY) বেড়ে যাওয়ায় স্বর্ণের বিনিয়োগকারীরা বিকল্প ভাবনায় যাচ্ছেন।
বাণিজ্য উত্তেজনার প্রশমন: যুক্তরাষ্ট্র ও এশিয়ার বড় দেশগুলোর মধ্যে সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তির খবরে বাজারে স্থিরতা ফিরে এসেছে। ফলে স্বর্ণের প্রতি নিরাপদ বিনিয়োগের চাহিদা কিছুটা কমে যাচ্ছে।
রেকর্ড মূল্যে মুনাফা তুলে নিচ্ছে অনেকে, যা মূল্য হ্রাসে বড় ভূমিকা রাখছে।
এদিকে, বিশ্বখ্যাত আর্থিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, এটা নিছক একটি বাজার সংশোধনও হতে পারে।
ইউবিএস-এর বিশ্লেষক জিওভান্নি স্টাওনোভো জানিয়েছেন, বাণিজ্য চুক্তি হলে বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকির দিকে ঝুঁকবে, স্বর্ণে আগ্রহ কমবে—এমনটাই প্রাথমিক ইঙ্গিত।
তবে অন্যদিকে, ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, মুদ্রাস্ফীতি বা অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়লে স্বর্ণই আবার হতে পারে সবচেয়ে নিরাপদ গন্তব্য।
বাংলাদেশের বাজারেও এর প্রভাব পড়বে?
স্বর্ণের আন্তর্জাতিক দামের ওঠানামার সঙ্গে বাংলাদেশের বাজারও সরাসরি সম্পর্কিত। ফলে সামনের দিনগুলোতে দেশের বাজারেও দাম কিছুটা কমতে পারে, তবে সেটা নির্ভর করবে ডলার রেট, আমদানি ব্যয় ও চাহিদার ওপর।
স্বর্ণের এই অস্বাভাবিক পরিবর্তন হয়তো অস্থায়ী, কিংবা বড় কোনো ধাক্কার পূর্বাভাস। তবে বিনিয়োগকারীদের উচিত বাজারের চলমান গতি, বৈশ্বিক রাজনীতি এবং আর্থিক প্রবণতা পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া। কারণ স্বর্ণ যেমন নিরাপদ, তেমনি কখনো কখনো সবচেয়ে বেশি চমকপ্রদও।