
আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ এক বিশাল মহাসমাবেশে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে ১২ দফা দাবিনামা উত্থাপন করেছে। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন দেশের শীর্ষ আলেম-ওলামা ও সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা।
সভাপতিত্ব করেন আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরী এবং মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন হেফাজতের নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হক। তিনি বক্তব্যের শুরুতে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বর ও ২০২১ সালের জুলাই আন্দোলনে নিহত ৮৪ জন শহীদ ছাত্র-শিক্ষকের স্মরণে দোয়া করেন এবং আহতদের জন্য সহানুভূতি প্রকাশ করেন।
হেফাজতের ঘোষিত ১২ দফা দাবি:
১. নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল ও নতুন ইসলামভিত্তিক কমিশন গঠন – কোরআন-বিরোধী প্রতিবেদন প্রত্যাহার ও আলেমদের পরামর্শক্রমে নারীদের ধর্মীয় মূল্যবোধে উন্নয়ন নিশ্চিতের দাবি।
২. আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা সংবিধানে পুনঃস্থাপন – বহুত্ববাদ ও এলজিবিটি সমর্থনকারী নীতিমালা প্রত্যাহার চাওয়া হয়েছে।
৩. শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যার বিচার ত্বরান্বিত – জাতীয় নির্বাচনের আগেই দায়ীদের বিচারের আহ্বান।
৪. আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা ও বিচার দাবি – দলটিকে ‘ফ্যাসিস্ট ও সন্ত্রাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধের আহ্বান।
৫. ধর্মীয় অবমাননার বিরুদ্ধে কঠোর আইন – আল্লাহ ও রাসুল (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির শাস্তির জন্য কঠোর আইন প্রণয়নের আহ্বান।
৬. সাইফুল ইসলাম হত্যার বিচার – চট্টগ্রামে নিহত আলেম সাইফুল ইসলাম হত্যায় জড়িতদের শাস্তি দাবি।
৭. মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নির্যাতনের বিচার – আলেম-ওলামা ও ইসলামী দলগুলোর বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের বিচার দাবি।
8. ইসরায়েল-ভারতের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক প্রতিবাদ ও পণ্য বয়কট – গাজা ও ভারতের মুসলিম নিপীড়নের প্রতিবাদে জাতীয় অবস্থান গ্রহণের আহ্বান।
৯. ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা – প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত ধর্মীয় শিক্ষা চালুর দাবি।
১০. রাখাইন ইস্যুতে সরকারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার – রাখাইনকে করিডোর দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘আত্মঘাতী’ উল্লেখ করে তা বাতিলের দাবি।
১১. পার্বত্য অঞ্চলে মিশনারি তৎপরতা বন্ধ – নিরাপত্তা জোরদার ও আলেমদের দাওয়াতি কাজের সুযোগ বাড়ানোর পরামর্শ।
১২. কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা – মুসলমানদের ঈমান রক্ষায় কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের কার্যক্রম বন্ধের দাবি।
এই ১২ দফা দাবির মাধ্যমে হেফাজত একদিকে সরকারের ধর্মবিরোধী অবস্থানের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে, অন্যদিকে রাজনৈতিক ভবিষ্যত দিকনির্দেশনাও স্পষ্ট করেছে। সমাবেশে অংশ নেওয়া হাজারো ধর্মপ্রাণ মানুষ ‘ইসলামী মূল্যবোধের প্রতিষ্ঠা’ ও ‘অবিচারের বিচার’– এই দুটি বিষয়ের ওপর জোর দেন।