
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজা সীমান্তবর্তী মিশরের রাফাহ ক্রসিংয়ের সামনে দাঁড়িয়ে মানবতার বার্তা দিলেন ইতালীয় পার্লামেন্ট ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একঝাঁক সদস্য। তারা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন—ইউরোপ শুধু নীরব দর্শক হয়ে আছে, অথচ ইসরায়েলের হামলায় শিশুদের রক্ত ঝরছে প্রতিনিয়ত।
আল জাজিরা সূত্রে জানা গেছে, ১১ জন ইতালীয় সংসদ সদস্য, ৩ জন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য এবং বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা হাতে প্ল্যাকার্ড ধরে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাদের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল‘এখনই গণহত্যা বন্ধ করুন’, ‘অবৈধ দখলদারিত্ব থামান’ এবং ‘ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করুন’।
ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য সিসিলিয়া স্ট্রাডা এএফপিকে বলেন, “ইউরোপ কিছুই করছে না। ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা এবং অবৈধ বসতিতে বাণিজ্য বন্ধ হওয়া উচিত।” তার মতে, এই নিষ্ক্রিয়তা ইউরোপীয় নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
বিক্ষোভকারীরা গাজার শিশুদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সড়কে খেলনা রেখে দেন। কারণ, জাতিসংঘের মতে, দুই মাসের বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ গাজায় শিশুদের ভবিষ্যৎ ‘ক্ষুধা, অসুস্থতা ও মৃত্যু’র ছায়ায় ঢাকা পড়েছে। অক্টোবর ২০২৩ থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ১৫ হাজার শিশু। এছাড়া তীব্র খাদ্য, পানি, ওষুধ ও জ্বালানির সংকটে দিন কাটছে লাখো মানুষের।
ইতালির অলাভজনক সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়াজিওন রিক্রিয়াটিভা কালচারাল ইটালিয়ানা’র সভাপতি ওয়াল্টার মাসা রাফাহ সীমান্তে দাঁড়িয়ে বলেন, “আমরা এখান থেকে বোমার শব্দ শুনতে পাচ্ছি। গাজার ওপারে মানুষ মরছে, আর বিশ্ব চুপ করে বসে আছে।”
এর আগেও ইতালির সরকার গাজায় হামলা বন্ধের আহ্বান জানায়। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি স্পষ্ট করে বলেন, “এখন অনেক হয়েছে। আমরা আর ফিলিস্তিনি জনগণকে এইভাবে কষ্ট পেতে দেখতে চাই না।”
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল আবারও পূর্ণমাত্রায় হামলা শুরু করার পর আরও ৩,১৯৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত এই সংঘাতে মোট প্রাণহানি ছুঁয়েছে ৫৩,৩৩৯ জনে।
সূত্র: আল জাজিরা, এএফপি, জাতিসংঘ, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়