২২শে মে, ২০২৫, ২৩শে জিলকদ, ১৪৪৬
সর্বশেষ
আন্তর্জাতিক মিত্র হারাচ্ছে ইসরায়েল, কূটনৈতিকভাবে একঘরে হওয়ার পথে
ভারত ৮ দিনে দ্বিতীয় পাকিস্তানি কূটনীতিককে বহিষ্কার করল
জেনিনে কূটনৈতিক প্রতিনিধিদলের দিকে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিবর্ষণ
গাজায় ইস*রা*য়েলি হাম*লায় নিহত ৫২, সহায়তা পৌঁছাতে ব্যর্থ
ইসরায়েলি দাবির পরেও গাজায় পৌঁছায়নি একটিও ত্রাণ, সীমান্তেই আটকে রয়েছে সহায়তা
অ’ভি’শপ্ত ই’হু’দী জাতি ই’স’রা’ইলের নি’শংস হা’মলায় গাজা এখন জী’বন্ত শি’শু’দের ক’বরস্থান! মা’নু’ষত্বহীন নি’র্ল’জ্জ বিশ্ব নেতাদের নিরব থাকার রহস্য কি?
গা’জা’য় পু’ষ্টিহী’নতা ও ওষুধের তীব্র সংকট, প্রাণ হারিয়েছে ৩০০-র বেশি নি’ষ্পা’প ফি’লি’স্তিনি শিশু
গাজায় দুর্ভিক্ষে ৩২৬ জনের মৃত্যু, আরও ১৪ হাজার শিশু মৃত্যুর মুখে!
আত্রাই নদীর ৩০ কোটির বাঁধ ফের ভেঙে পড়েছে, বাংলাদেশে বন্যার আশঙ্কা!
কালিয়াকৈরে প্রবাসীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা লুট
গাজা যুদ্ধ বন্ধ না হলে ইসরায়েলকে সমর্থন না দেওয়ার হুঁশিয়ারি ট্রাম্প প্রশাসনের
বেধড়ক পিটুনি খেয়ে আমিরাতের বিপক্ষের টাইগারদের লজ্জাজনক পরাজয়! হার নিয়ে অধিনায়ক দাসের হাস্যকর বাহানা
গাজায় ঢুকছে ত্রাণ, একদিকে সহায়তা অন্যদিকে ই*স*রা*য়েলের ভয়াবহ স্থল অভিযান—আসলে কী হচ্ছে?
যুক্তরাষ্ট্র থেকে টাকা পাঠালেই ৫% কর দিতে হবে! বিপাকে লাখো প্রবাসী
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও টাইগারদের রানের পাহাড়ে চাপা পড়লো আরব আমিরাত

কোরবানির মহা গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা ও ফজিলত সম্পর্কে যেনে নিন।

আওয়ার টাইমস নিউজ।

মুমিন মুসলমানদের দুয়ারে কড়া নাড়ছে ঈদুল আজহা বা কোরবানি ঈদ। রাসুল সা. স্বীকৃত দুই ঈদের একটি হলো পবিত্র ঈদুল আজহা অর্থাৎ কোরবানি ঈদ। এ কোরবানি শব্দের অর্থ হলো  নৈকট্য, ত্যাগ, উৎসর্গ। অর্থাৎ  শুধুমাত্র মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যেই এ কোরবানি হয়ম। আমরা বাঙালী কোরবানির ঈদ বলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করি। কারণ মুমিনের জীবনের একমাত্র আরাধনা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা। আর প্রকৃত কোরবানি তাকে অত্যন্ত দ্রুত আল্লাহর নৈকট্যে পৌঁছে দেয়।

কোরবানির  ঈদ-পালনের মাধ্যমে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ আল্লাহর প্রিয় বান্দা ও নবী হজরত ইব্রাহিম আ. ও হজরত ইসমাইল আ. এর সুন্নতের আনুগত্য এবং মহান ত্যাগের পুণ্যময় স্মৃতি বহন করে। আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টির জন্য মুসলিম উম্মাহ প্রতি বছর পশু কোরবানি করে থাকে।

মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দিচ্ছেন, ‘অতএব আপনি আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি করুন’ (সুরা কাউসার, আয়াত ২)।

পশু কোরবানি একটি প্রতীকি ব্যাপার। এখানে মুখ্য হয়ে থাকে তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে রবের সন্তুষ্টি। কোরআনের ভাষায়, ”আল্লাহর কাছে পৌঁছে না এগুলোর গোশ্ত ও রক্ত; বরং তাঁর কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া।” (সুরা হজ, আয়াত ৩৭)

এখানে পশু কোরবানির মাধ্যমে মুসলমানরা প্রমাণ করে, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জানমাল থেকে শুরু করে সবকিছুই কোরবানি করতে প্রস্তুত। হজরত ইব্রাহিম আ. ও তার পুরো পরিবারের নজিরবিহীন কোরবানির ইতিহাস মানুষকে যে ত্যাগের শিক্ষা দেয় তাতে উদ্বুদ্ধ হয়ে একজন মুমিন তার সবকিছুই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গ করতে সদা প্রস্তুত থাকে।

তারা যে প্রতিদান পেয়েছেন,

হজরত ইব্রাহিম আ. এবং তার প্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল আ. এবং মা হাজেরার আল্লাহর প্রতি গভীর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশগুলো আল্লাহ তায়ালা হজের অংশ হিসেবে গণ্য করেছেন।

এই কোরবানি আমাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শিক্ষা দেয়। তার মধ্যে,

নরবলী নয়; নিজেকে আল্লাহর রাহে উৎসর্গ করা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয়

আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন হযরত ইব্রাহিম আ. -কে স্বপ্নে দেখালেন, তিনি তার পুত্রকে জবাহ করছেন (সুরা সাফ)। পিতা ইব্রাহিম স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে গেলে আল্লাহ বললেন, হে ইব্রাহিম, তুমি তোমার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছ। আমি তোমাকে নিজ পুত্রকে আমার পথে উৎসর্গ করতে বলেছি, হত্যা করতে নয়। তোমার পুত্র সারাজীবন লোকদেরকে বুঝাবে আল্লাহ এক-অদ্বিতীয়। প্রশ্ন হলো, তাহলে কেন দুম্বা বা ছাগল জবাই করলেন? এর উত্তর হলো, যদি সেদিন এই ঘটনা না ঘটতো তাহলে তৎকালীন ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী কোন কোন জাতিতে প্রভুকে বা দেব-দেবীদেরকে খুশি করার জন্য নরবলী তথা মানুষ কোরবানি চলমান ছিল। অতএব আল্লাহ মানবজাতিকে শিক্ষা দিলেন, মানুষ জবাহ করার জিনিস নয়, জবাহ যদি করতে হয় তাহলে পশু জবাহ করো।

পশু জবেহের প্রচলণ রাসুল সা. করেননি; পূর্বেই ছিল

ইতিহাস পাঠে জানা যায়, হজরত রসুলে পাক সা. এর শ্রদ্ধেয় পিতা একবার অসুস্থ হলে তার দাদা একশত উট জবাহ করেছিলেন (সিরাতে নববী)। এ থেকে প্রতীয়মান হয়, পশু জবাই করা রসূল সা. প্রচলন করেননি বরং পূর্বেই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু জবাই করা হতো।

মূল উদ্দেশ্য আন্তরের পশু জবেহ করা।

কারোর হৃদয়ে যদি কোন পশু সূলভ আচরণ থাকে সেই পশুত্বকে হত্যা করতে হবে, সেটাকে জবাই করতে হবে।

কোন কোরবানিকে কোরবানি বলা হবে?

হাদিসে আছে, পশু জবাই খোদা তায়ালার নৈকট্য লাভের একটি মাধ্যম তবে তা ঐ ব্যক্তির জন্য যে নিষ্ঠার সাথে কেবল আল্লাহ তায়ালার ভালোবাসায়, তার ইবাদাতের উদ্দেশ্যে ঈমান সহকারে পশু জবাই করে এমন কোরবানিকে আরবিতে ‘নুসক’ বলা হয়েছে, যার আরেকটি অর্থ অনুগত। আত্মত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যারা আল্লাহর নামে কোরবানি করে তাদের জন্য সীমাহীন সওয়াবের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রাসুলুল্লাহ সা.।

সামর্থবানদের প্রতি বছর কোরবানি দিতে হবে

মহানবী সা. বিভিন্ন সময় কোরবানির বিষয়ে তার উম্মতকে নসিহত করেছেন। কারো হৃদয়ে যদি এমন ধারণার উদ্রেক হয় যে, প্রতি বছরই তো কোরবানি দিয়ে যাচ্ছি এবার না হয় দিলাম না, এমনটি চিন্তাভাবনা মোটেও ঠিক নয়, কেননা কোরবানি শুধু একবারের জন্য নয় বরং তা সারা জীবনের জন্য। হাদিস থেকে জানা যায়, মহানবী সা. বলেছেন, ‘হে লোক সকল! জেনে রাখ, প্রত্যেক পরিবারের পক্ষে প্রত্যেক বছরই কোরবানি করা আবশ্যক’ (আবু দাউদ ও নাসাঈ)।

হজরত ইবনে উমর রা. বলেন, মহানবী সা. মদীনায় ১০ বছর অবস্থান করেছেন এবং বরাবর কোরবানি করেছেন (তিরমিজি)।

কোরবানি দাতার প্রতিদান কী হবে?

মহানবী সা. বলেছেন, কোরবানির দিনে কোরবানি করাই সবচেয়ে বড় ইবাদত। কোরবানির জন্তুর শরীরের প্রতিটি পশমের বিনিময়ে কোরবানিদাতাকে একটি করে সওয়াব দান করা হবে। কোরবানির পশুর রক্ত জবাই করার সময় মাটিতে পড়ার আগেই তা আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায় (মেশকাত)।

উল্লেখ্য, কোরবানির বিনিময়ে সওয়াব পেতে হলে অবশ্যই কোরবানিটা হতে হবে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে।

আল্লাহ আমাদের কোরবানি কবুল করুন আর আমাদের আত্মাকে পবিত্র করুন, আমিন।

লেখক: মুফতি ফারহান ফরিদ
মুহাদ্দিস, আল-এহসান উম্মে কুলসুম মাদরাসা, গফরগাঁও, ময়মনসিংহ।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

ফেসবুক পেজ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

Archive Calendar
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
৩১  

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত