
আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: বহুল আলোচিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ কবে ঘোষণা হবে, এই প্রশ্নে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে জল্পনা-কল্পনা চলছে, তা আরও তীব্র হয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের ‘ওয়ান টু ওয়ান’ বৈঠকের পর। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ভোটের সময়সূচি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এ বৈঠকের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কিংবা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং না এলেও, বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, এই সাক্ষাৎ ছিল লন্ডনে তারেক রহমান ও ড. ইউনূসের পূর্ববর্তী বৈঠকের একটি ফলোআপ। গত ১৩ জুন লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠকে নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাব্য সময় হিসেবে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধের কথা বলা হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় এখন নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেও প্রস্তুতির কথা বারবার শোনা যাচ্ছে।
সিইসি নাসির উদ্দিন এর আগেও নির্বাচনী প্রস্তুতির বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হলে নির্বাচন কমিশন সরকারের ‘ভাব’ বুঝে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।” এ বক্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে, নির্বাচন কমিশন এখন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও সরকারের প্রস্তুতি বুঝে একটি সময় নির্ধারণ করতে আগ্রহী।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান বলেন, “আমাদের সংবিধানের বিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিলেও, বাস্তব প্রেক্ষাপটে এখন মূল সিদ্ধান্ত আসে রাজনৈতিক সমঝোতার ভিত্তিতে। আমি মনে করি, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এই বৈঠকে সিইসি মৌখিকভাবে ফেব্রুয়ারির দিকেই ইঙ্গিত পেয়েছেন। এখন কেবল আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, “লন্ডনের আলোচনার পর থেকেই ফেব্রুয়ারির ইঙ্গিত ছিল। এখন সিইসির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকটি সেই ঘোষণার পূর্বপ্রস্তুতি বলেই মনে হচ্ছে। আশা করা যায়, নির্বাচন কমিশন এখন শিগগিরই একটি নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করবে।”
সব মিলিয়ে বলা যায়, বহুল প্রতীক্ষিত নির্বাচন নিয়ে দৃশ্যপট কিছুটা পরিষ্কার হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি সমঝোতা এবং নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতির মধ্যে সময়ের ব্যবধান কমে আসছে। ফলে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নির্ভরযোগ্য একটি ঘোষণার অপেক্ষা করছেন দেশবাসী। ধারণা করা হচ্ছে, রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার একটি পূর্ণাঙ্গ কমিশন বৈঠকে অংশ নিয়ে এই বিষয়গুলো চূড়ান্ত করবেন।
তথ্যসূত্র: যুগান্তর, নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক বিশ্লেষণ