১৮ই এপ্রিল, ২০২৫, ১৯শে শাওয়াল, ১৪৪৬
সর্বশেষ
রাজনীতিতে আসা ভুল ছিল না, নির্বাচন করলে আবার জিতব বললেন সাকিব” সাকিবকে রক্ত খেকোর অনুসারী আখ্যা দিয়ে সমালোচনার ঝড়
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮ আহত ১০২, বেজে উঠছে যুদ্ধের ধামামা!
ভারতকে মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধে ও তাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর বার্তা দিলেন ডক্টর. মুহাম্মদ ইউনূস সরকার
জুলাই বিপ্লবে ছাত্র হত্যা মামলার আসামি আওয়ামী নেতা শাহে আলম মুরাদ পুলিশের জালে আটক!
বুড়া মানুষ গুলি খাইছে, মরলে সমস্যা নেই’ আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত বৃদ্ধাকে দেখে ডাক্তারের নিষ্ঠুর আচরণে লজ্জিত সমগ্র জাতি
বেনাপোল দিয়ে ভারতীয় চাল আমদানি বন্ধ করলো ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকার
মার্চ ফর গাজা’র হুংকারে বাংলাদেশি পাসপোর্টে হা/য়/না ই’স’রা’ইল নিষিদ্ধ, প্রশংসায় ভাসছেন ড. ইউনূস সরকার
বিডিআর হত্যাকাণ্ডের গভীর রহস্য খুঁজে বের করতেই হবেঃ প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের দৃঢ় ঘোষণা
পেরেশানি ও দুশ্চিন্তা দূর করতে চান? এই আমল গুলো আপনার হৃদয়ে এনে দেবে প্রশান্তির পরশ
পিএসএলে হাইভোল্টেজ ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করে দলকে জেতালেন বাংলার স্পিন টাইগার রিশাদ

যাদের এক সময় আশ্রয় দিয়েছিল, আজ তারাই দখলদার, নিজ ভূমিতে আজ পরবাসী ফি/লি/স্তিন

আওয়ার টাইমস নিউজ।

ফিলিস্তিনিদের ৭৫ বছরের দীর্ঘ সংগ্রাম ও মানবিক বিপর্যয়ের কাহিনী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের ইতিহাসে আজ এক অদ্ভুত মোড় এসেছে। একটি জাতি, যারা এক সময় তাদের ভূমিতে আশ্রয় দিয়েছিল, আজ সেই ভূমিতে পরবাসী। ৭৫ বছর আগে যখন ইহুদি জনগণ তাদের নিজেদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছিল, তখন ফিলিস্তিনিদের জন্য তারা ছিল একটি আশ্রয়ের জায়গা। তবে আজ সেই আশ্রয়দাতা একেবারে দখলদার হয়ে উঠেছে, এবং ফিলিস্তিনিরা তাদের নিজেদের জমি থেকে পরবাসী হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে।

এই দীর্ঘ ৭৫ বছরের সময়ে, ফিলিস্তিনের জনগণ নানা সংগ্রাম, যুদ্ধ, সহিংসতা, দখলদারিত্ব এবং মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে তাদের অস্তিত্ব রক্ষা করার চেষ্টা করছে। দখলদারিত্ব, নিপীড়ন এবং নির্যাতনের মুখে, ফিলিস্তিনিরা আজ তাদের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার ফেরানোর জন্য এক অবিরাম সংগ্রামে লিপ্ত।

১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর, ফিলিস্তিনিরা ৭ লাখ এরও বেশি জনগণকে তাদের নিজ ভূমি থেকে বিতাড়িত হতে হয়। এই ঘটনায় যে ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছিল তা ফিলিস্তিনিদের কাছে “নাকবা” (বিপর্যয়) নামে পরিচিত। শত শত গ্রাম ধ্বংস হয়ে যায়, এবং লাখ লাখ মানুষ শরণার্থী হিসেবে পরিণত হয়। এটি ছিল ফিলিস্তিন সংকটের প্রথম বড় ধাক্কা, যেখানে ফিলিস্তিনিরা তাদের আবাসস্থল, ভূমি এবং ভবিষ্যত সবকিছু হারিয়ে ফেলেছিল।

১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধে, ইসরায়েল গাজা, পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গোলান মালভূমি দখল করে নেয়। ফিলিস্তিনিরা একে ‘যুদ্ধের দ্বিতীয় ধাক্কা’ হিসেবে অভিহিত করে, যেখানে তারা আরও অধিক ভূমি হারায় এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দখলে তাদের জীবন আরও কঠিন হয়ে ওঠে।

১৯৮৭ সালে, ফিলিস্তিনিরা প্রথম ইন্তিফাদা (গণবিদ্রোহ) শুরু করে। পাথর ছুঁড়ে, বিক্ষোভ করে, তারা ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। যদিও ইসরায়েলি বাহিনী তাদের উপর অত্যন্ত সহিংস দমন-পীড়ন চালায়, তবুও এই আন্দোলন ফিলিস্তিনিদের সাহসী প্রতিরোধের একটি প্রতীক হয়ে ওঠে।

১৯৯৩ সালে ইসরায়েল এবং প্যালেসটাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (PLO) এর মধ্যে অসলো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা ফিলিস্তিনিদের স্বায়ত্তশাসন প্রদানের আশ্বাস দেয়। তবে, ইসরায়েলি বসতি নির্মাণ অব্যাহত থাকায় এবং চুক্তির শর্ত পালিত না হওয়ায়, ফিলিস্তিনিরা তাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন তেমনভাবে বাস্তবায়িত করতে পারেনি।

২০০৮ সাল থেকে গাজার উপর ইসরায়েলি হামলা এবং অবরোধ ফিলিস্তিনিদের জন্য এক মানবিক সংকট সৃষ্টি করে। ২০১২, ২০১৪, এবং ২০২১ সালে গাজায় সামরিক অভিযান চলাকালে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়। তবে, এইসব হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসের মধ্যেও ফিলিস্তিনিরা তাদের অধিকার ও স্বাধীনতা ফিরে পাওয়ার লড়াই অব্যাহত রেখেছে।

২০২৩ সালে নতুন করে শুরু হয় হামাস এবং ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ। ৩০,০০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। বিশ্বব্যাপী মানবিক সহায়তার আহ্বান জানানো হলেও, ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসন থামানো সম্ভব হয়নি।

ফিলিস্তিনে চলমান সহিংসতা নিয়ে জাতিসংঘ বারবার নিন্দা জানালেও, নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের ভেটো পাওয়ার কারণে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়নি। বিশ্ব জনমত ফিলিস্তিনিদের পক্ষে থাকলেও, রাজনৈতিক সমাধান আজও অধরা।

আজ, ফিলিস্তিনিরা তাদের স্বাধীনতা ও ভূমি ফিরে পাওয়ার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু গাজার ধ্বংসস্তূপ, পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি, এবং ইসরায়েলি আগ্রাসন তাদের জীবনে এক কঠিন বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, ইতিহাস থেকে তারা শিখেছে যে তারা কখনো হার মানবে না—তারা এখনও তাদের স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

ফিলিস্তিন সংকট শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নয়, এটি একটি মানবিক সংকট। যেখানে এক জাতির স্বাধীনতা, অধিকার এবং জীবনযাত্রার সংগ্রাম চলছে। আজকের এই ফিলিস্তিন, যাদের একসময় আশ্রয় দিয়েছিল, সেই দেশই তাদের দখলদার হয়ে উঠেছে। প্রশ্ন হল, তাদের স্বাধীনতা ও অধিকার ফেরাতে বিশ্ব কি কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, নাকি এই সংগ্রাম আরও দীর্ঘ হবে?

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

ফেসবুক পেজ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

Archive Calendar
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০  

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত