
আওয়ার টাইমস নিউজ।
স্পেশাল করেসপন্ডেন্টঃ হুসাইন আল আজাদ।
দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণাসহ ১২ দফা দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। শনিবার (৩ মে) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত এক মহাসমাবেশে এসব দাবি উত্থাপন করেন সংগঠনের শীর্ষ নেতারা।
মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী এবং প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হক। তিনি বলেন, “জনগণের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে যারা গণহত্যা চালিয়েছে, তাদের বিচারের মাধ্যমে জাতিকে মুক্ত করতে হবে।”
সমাবেশ থেকে উত্থাপিত ১২ দফা দাবির মূল বিষয়বস্তু:
১. নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাতিল: কোরআন-বিরোধী মন্তব্য ও প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নতুন কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়, যাতে আলেম-ওলামা ও ধর্মীয় নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়।
২. সংবিধানে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা পুনঃস্থাপন: ধর্মীয় মূল্যবোধকে অগ্রাধিকার দিয়ে সমকামিতা ও তৃতীয় লিঙ্গের অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
৩. শাপলা চত্বর গণহত্যা ও ২০২৩ সালের শহীদদের বিচারে ট্রাইব্যুনাল গঠন ও কার্যক্রম দ্রুততর করা।
৪. আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী দল ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করা এবং তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে বিচার নিশ্চিত করা।
৫. ধর্মীয় অবমাননার বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও মিডিয়া কমিশনের সংশ্লিষ্ট সুপারিশ বাতিল।
৬. চট্টগ্রামে সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার ও জামিন বাতিলের দাবি।
৭. ধর্মভিত্তিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং ১৫ বছরের নির্যাতনের বিচার।
৮. ইসরায়েল ও ভারতের মুসলিম নির্যাতনের বিরুদ্ধে জোরালো কূটনৈতিক পদক্ষেপ এবং বয়কট আন্দোলন।
৯. সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থায় ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা।
১০. রাখাইন করিডোর সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান ও ভৌগোলিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা।
১১. পার্বত্য চট্টগ্রামে মিশনারি তৎপরতা বন্ধ ও দাওয়াতি কার্যক্রমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
১২. কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা ও ঈমান রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ।
হেফাজত নেতৃবৃন্দ বলেন, এ দাবিগুলো জাতির বিশ্বাস, চেতনা ও ভবিষ্যতের সঙ্গে সম্পর্কিত। সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়, ধর্মপ্রাণ জনগণের এ দাবিগুলো গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নেওয়া হোক।