
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজার দক্ষিণে খান ইউনিস শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো ভয়াবহ বিমান হামলায় পুরো পরিবার হারালেন ফিলিস্তিনি শিশু চিকিৎসক ডা. আলা আল-নাজ্জার। এই হামলায় তার ৯ সন্তান আগেই নিহত হয়েছিল। আর এবার আহত অবস্থায় মারা গেলেন তার স্বামী, ডা. হামদি আল-নাজ্জার। শুধু একমাত্র সন্তান আদম—সে এখন এই পরিবারে জীবিত একমাত্র সদস্য।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আলবোর্শ এক্স-প্ল্যাটফর্মে জানান, ৩১ মে ডা. হামদি মারা যান। তিনি লিখেছেন, “একটি পুরো পরিবার শেষ হয়ে গেল, বেঁচে রইলেন শুধু শোকাহত মা আর তার আহত এক সন্তান।”
২৪ মে রাতে খান ইউনিসে আল-নাজ্জার পরিবারের বাড়িতে বোমা ফেলেছিল ইসরায়েলি ড্রোন। সেই মুহূর্তে চিকিৎসক আলা আল-নাজ্জার কর্তব্যরত ছিলেন গাজার নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে। হঠাৎ তার সামনে নিয়ে আসা হয় তার নিজের ৯ সন্তানের ঝলসে যাওয়া মৃতদেহ। ভেঙে পড়েছিলেন তিনি—চোখের সামনে ধ্বংস হয়েছিল তার সমস্ত কিছু।
আলা আল-নাজ্জারের এক আত্মীয় জানান, হতাহতদের মৃতদেহ এতটাই পুড়ে গিয়েছিল যে, তাদের চেনা যায়নি। হামলার দায় স্বীকার না করলেও ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা ড্রোন হামলার বিষয়টি তদন্ত করবে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় লাগাতার বর্বর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এরইমধ্যে নিহত হয়েছেন প্রায় ৫৪ হাজার ৪০০ জন ফিলিস্তিনি—যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। খাদ্য ও চিকিৎসা সংকটে থাকা এই অঞ্চলে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বারবার গণদুর্ভিক্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গত নভেম্বরে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একইসঙ্গে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে মামলা চলছে।