
আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: সাবেক আওয়ামী সরকারের আমলের বিতর্কিত নির্বাচনের দায়ে সাবেক তিনজন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট কমিশনারদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির দাবি, ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ ও গণতন্ত্র ধ্বংসে এই কমিশনগুলোর বড় ভূমিকা ছিল।
শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। তিনি জানান, রোববার সকালে (২২ জুন) শেরেবাংলানগর থানায় মামলা দায়ের করা হবে। একইদিনে বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছেও চিঠি হস্তান্তর করা হবে বলে জানান বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
২০১৪ সালের নির্বাচন:
৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বর্জন ও সহিংসতা দেখা দেয়। তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত সেই নির্বাচনে ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন আওয়ামী লীগ ও তাদের জোটের প্রার্থীরা। বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নেয়নি।
২০১৮ সালের নির্বাচন:
৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অনিয়মের অভিযোগ তোলে বিএনপি। অভিযোগে বলা হয়, নির্বাচনের আগের রাতেই ব্যাপকহারে ব্যালট বাক্স পূর্ণ করা হয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট ২৮৮টি আসনে বিজয়ী হয়। সেই সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন কে এম নুরুল হুদা, এবং কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী ও মাহবুব তালুকদার।
২০২৪ সালের নির্বাচন:
সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনেও ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন ওঠে। নির্বাচন চলাকালীন ভোটার উপস্থিতির হার নিয়েও বিভ্রান্তি তৈরি হয়। শুরুতে বলা হয়, দুপুর ৩টা পর্যন্ত ভোট পড়ে ২৭ দশমিক ১৫ শতাংশ। পরে তা এক ঘণ্টার মধ্যে বেড়ে ৪০ শতাংশে উন্নীত হয়। সিইসি হাবিবুল আউয়াল প্রথমে ২৮ শতাংশ বললেও পরে তা সংশোধন করেন।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই তিনটি নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। সেই জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।