
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুদ্ধবিরতির ঘোষণা সত্ত্বেও ইরান-ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান সংঘাত থামছে না, বরং পরিস্থিতি ক্রমেই আরও জটিল ও বিস্তৃত আকার ধারণ করছে। উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলা, দোষারোপ ও হুঁশিয়ারিতে এই মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি এক বিবৃতিতে ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেন, “বোমা ফেলানো বন্ধ করুন, আপনার পাইলটদের এখনই ঘরে ফিরিয়ে আনুন!” তার এই বার্তায় বোঝা যাচ্ছে, যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও ইসরায়েলের যুদ্ধাভিযান বন্ধ হয়নি, যা ওয়াশিংটনের ভেতরেও অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানিয়েছেন, তেহরানের ওপর ‘তীব্র হামলার’ নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তার অভিযোগ, ইরান যুদ্ধবিরতির চুক্তি ভঙ্গ করেছে। তবে ইরান এই দাবি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে। বরং তারা বলছে, ইসরায়েলই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে এবং তারা এখন পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত।
সোমবার ইরান কাতারে অবস্থিত একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। তেহরান জানিয়েছে, এটি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার প্রতিক্রিয়ায় সংঘটিত হয়েছে।
ইরান দাবি করেছে, ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় তাদের দেশে এখন পর্যন্ত ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৩ জন শিশু রয়েছে। আহত হয়েছে ৩ হাজারের বেশি মানুষ। অন্যদিকে, ইরানি হামলায় ইসরায়েলে ২৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, ইরানের শীর্ষ নিরাপত্তা পরিষদ থেকে জানানো হয়েছে, যদি ইসরায়েল আবার হামলা চালায়, তাহলে তারা “উপযুক্ত ও চূড়ান্ত জবাব” দিতে প্রস্তুত।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের ভাষ্যমতে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণাটি কেবল কাগজে-কলমেই রয়ে গেছে। বাস্তবে উভয় পক্ষ নিজেদের অবস্থানকে জোরদার করতে ও প্রতিপক্ষকে দুর্বল করতে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে সংঘাত আরও ঘনীভূত হচ্ছে, এবং এটিকে থামাতে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো কূটনৈতিক উদ্যোগ সফল হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের পরিস্থিতি বিশ্ব রাজনীতিতে ধর্মভিত্তিক যুদ্ধের (Holy War) সম্ভাবনাকে উসকে দিচ্ছে, যার আশঙ্কা মধ্যপ্রাচ্যের আলেম ও আন্তর্জাতিক গবেষকগণ বহুদিন ধরেই করে আসছেন।
তথ্যসূত্র: Al Jazeera, The Guardian, Reuters