
আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: যশোরের একটি মাদরাসার বার্ষিক অনুষ্ঠানের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, সুসজ্জিত মঞ্চে সাদা পায়জামা ও টুপি পরিহিত কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিনয় করছেন। তাদের মধ্যে কেউ মঞ্চে দাঁড়িয়ে আরবিতে বক্তব্য দিচ্ছেন, আবার কেউ নকল অস্ত্র হাতে নিয়ে মঞ্চে উপস্থিত রয়েছেন।
ভিডিওটি যশোর সদর উপজেলার রামনগর রাজারহাট এলাকার জামিয়া ইসলামিয়া মাদরাসায় ১৭ ও ১৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের একটি অংশ। মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম মুফতি লুৎফর রহমান ফারুকী জানান, প্রতিবারের মতো এবারও শিক্ষার্থীদের গজল, হামদ, আরবি এবং বাংলা ভাষায় বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী মানুষের সংগ্রাম নিয়ে একটি নাটক মঞ্চস্থ করেন।
নাটকের অংশ হিসেবে কিতাব বিভাগের তিন শিক্ষার্থী কাঠ, প্লাস্টিক এবং শোলা দিয়ে বানানো নকল অস্ত্র ব্যবহার করে অভিনয় করেন। একজন শিক্ষার্থী ফিলিস্তিনি নেতা হিসেবে আরবিতে বক্তব্য দেন।
মুফতি লুৎফর রহমান বলেন, “এটি শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের প্রতিভা বিকাশের জন্য করা হয়েছে এবং এর কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না। কিন্তু ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার পর ভিন্ন অর্থে প্রচার করা হচ্ছে, যা আমাদের মাদরাসার সুনামের ক্ষতি করছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কওমি মাদরাসায় প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। প্রতিষ্ঠানটি হাফেজ, মাওলানা ও মুফতি ডিগ্রি প্রদান করে।
ঢাকার একজন ইসলামি চিন্তাবিদ জানান, “অনুষ্ঠানে কোরআনের কতল ও জিহাদ সংক্রান্ত আয়াত পাঠ করা হয়েছে। এটি হয়তো অভিনয়ের অংশ, তবে এভাবে সশস্ত্র গার্ডের মতো প্রদর্শন মাদরাসা এবং আলেমদের সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি করতে পারে।”
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, “ভিডিওটি দেখেছি। এটি মাদরাসার বার্ষিক প্রতিযোগিতার অংশ। শিক্ষার্থীরা ডামি অস্ত্র ব্যবহার করে অভিনয় করেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর ই আলম সিদ্দিকী বলেন, “অনুষ্ঠানে নকল অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এটি বার্ষিক অনুষ্ঠানের অংশ হলেও, এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে।
যশোরের মাদরাসার এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এটি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতার অংশ হলেও কিছু ভুল উপস্থাপন ও প্রতিক্রিয়া মাদরাসা ও তাদের পরিচালকদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং এ নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করার চেষ্টা করছে।