
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার বছরের শেষ সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেছেন, ২০২২ সালে ইউক্রেনে আক্রমণের আগে আরও ভালো প্রস্তুতি নেওয়া উচিত ছিল। তিনি বলেন, রাশিয়ার আরও আগেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল এবং যুদ্ধের জন্য আরও কার্যকর কৌশলগত প্রস্তুতি প্রয়োজন ছিল। পুতিন তার বক্তব্যে আক্রমণটিকে “বিশেষ সামরিক অভিযান” হিসেবে উল্লেখ করেন।
২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চল দখল করে এবং পূর্ব ইউক্রেনে রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সমর্থন দেয়। আট বছর পর, ২০২২ সালে, পুতিন কিয়েভ দখলের জন্য ব্যাপক সামরিক অভিযান চালান। এই অভিযান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয় এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
চার ঘণ্টাব্যাপী এই সংবাদ সম্মেলনে পুতিন আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। সিরিয়া সংকট, রাশিয়ার পারমাণবিক নীতি এবং দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি নিয়ে তিনি কথা বলেন। তিনি জানান, সিরিয়ার পরিস্থিতি ক্রেমলিনের জন্য একটি “জটিল চ্যালেঞ্জ” ছিল এবং বাশার আল-আসাদের সরকারের অবস্থা নিয়েও আলোচনা করেন।
পুতিন জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়া এখন তার সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধার করেছে, যা আগে সংকটে ছিল। তিনি আরও দাবি করেন যে, রাশিয়া এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।
এই সংবাদ সম্মেলনটি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়। এটি অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত এবং পরিকল্পিত ছিল, যেখানে সাধারণ নাগরিক, সাংবাদিক, এবং অন্যান্য পেশাজীবীরা পুতিনকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। সংবাদ সম্মেলনে পুতিন একটি বিশাল মানচিত্রের সামনে উপস্থিত হন, যেখানে ইউক্রেনের রুশ-দখলকৃত অঞ্চলও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এছাড়াও পুতিন জানান, সিরিয়ার বাশার আল-আসাদের সঙ্গে শিগগিরই আলোচনার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আসাদ সরকারের সমর্থনে রাশিয়ার ভূমিকা তুলে ধরেন এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে রাশিয়ার অবস্থান শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি দেন।
পুতিনের এ বক্তব্যে রাশিয়ার কৌশলগত ভুলের আংশিক স্বীকৃতি দেখা গেছে, যা তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ইঙ্গিত দেয়। একই সঙ্গে, তার মন্তব্য রাশিয়ার আন্তর্জাতিক অবস্থান পুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরে।