
আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ জানিয়েছেন, যারা আজ দোষারোপের রাজনীতি করছে, তারা যেন নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের পরিণতি ভুলে না যায়। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতের দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ তার পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ ছিল শোষিত, নিপীড়িত ছাত্র-জনতার এক ঐতিহাসিক বিপ্লব। এই আন্দোলন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জনগণের সোচ্চার প্রতিবাদের প্রতীক এবং স্বৈরাচারের পতন ঘটানোর এক অনিবার্য ধাপ। সেই সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে লক্ষ লক্ষ মানুষ রাস্তায় নেমে আসে, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের শপথ নেয়।
তিনি বলেন, এই বিপ্লবের মাধ্যমে দেশের প্রায় সব ছাত্রসংগঠন এক ছাতার নিচে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, যা ইতিহাসে বিরল। শোষণ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে এটি ছিল এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
এই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অনেক তরুণ-তরুণী শহীদ হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। পিচ্চি রিয়া গোপ থেকে শুরু করে বৃদ্ধ রিকশাওয়ালা—শত শত নিরপরাধ মানুষের শাহাদাত এই আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি গড়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, এই আত্মত্যাগ কখনো বৃথা যাবে না। এই বিপ্লবের কারণেই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে, এবং আন্দোলনের মূল সংগঠন হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেরই রাষ্ট্রীয় সংলাপে অংশগ্রহণের অধিকার রয়েছে।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আজ যারা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, তাদের জিজ্ঞাসা করা উচিত—ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় তারা কেন এই ব্যানারে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন?
তিনি আরও বলেন, “ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে, তখন তো কেউ প্রশ্ন তোলেনি। তাহলে এখন কেন এসব প্রশ্ন সামনে আনা হচ্ছে?
তিনি অভিযোগ করেন, কিছু মহল কৃত্রিম বিতর্ক তৈরি করে আন্দোলনকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হলো এই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দানকারী প্ল্যাটফর্ম। এই প্ল্যাটফর্ম দেশের সব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল এবং এটি রাষ্ট্র পুনর্গঠনের অংশ।
তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কোনো দলের মনিটরিংয়ের অধীনে নয়, এটি জনগণের আন্দোলন।
পোস্টের শেষ দিকে তিনি আরও বলেন,
“আজ যারা দায় চাপিয়ে দেওয়ার রাজনীতি করছে, তারা যেন ছাত্রলীগের করুণ পরিণতি ভুলে না যায়। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না। আমরা সংলাপে থাকব, দেশ সংস্কারে ভূমিকা রাখব, আর কোনো ষড়যন্ত্র আমাদের থামাতে পারবে না। আমাদের হাজারো ভাইয়ের রক্তের ঋণ আমরা সুদে-আসলে শোধ করব।
সবশেষে তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদের পতন অনিবার্য! গণজাগরণ অপ্রতিরোধ্য! বিজয় আমাদেরই হবে।”