
আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: বর্তমান সময়ের সবচেয়ে ভয়াবহ সমস্যা হিসেবে শিশু ধর্ষণ দিন দিন বাড়ছে। শিশুদের প্রতি এমন পাশবিক নির্যাতন সমাজের নৈতিকতার ওপর এক বড় আঘাত। বাংলাদেশে যেখানে এই অপরাধের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে, সেখানে শুধু আইনি ব্যবস্থা নয়, বরং আমাদের সামাজিক সচেতনতা, শিক্ষা এবং প্রত্যেকের দায়িত্বশীলতা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
শিশুরা নিজস্ব শারীরিক গোপনীয়তা সম্পর্কে অনেক সময় সচেতন নয়, আর এ কারণেই তাদের উপর যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। শিশুদের সঠিক শিক্ষা এবং “ভালো স্পর্শ, খারাপ স্পর্শ” বিষয়ে তাদের সচেতন করা অত্যন্ত জরুরি। বাবা-মায়ের প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে তাদেরকে এমন বিষয়ে জানানো, যাতে তারা কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সম্পর্কে অবগত থাকে এবং সহজে ভয় ছাড়া সেগুলো প্রকাশ করতে পারে।
শিশুদের শেখাতে হবে, তাদের শরীরের কিছু অংশ শুধুমাত্র তারা নিজেই দেখতে ও স্পর্শ করতে পারে। বিশেষ করে, গোপনাঙ্গ, বুকের অংশ এবং পায়ুপথের মতো ব্যক্তিগত অঙ্গগুলোর প্রতি সচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার। একই সঙ্গে শিশুদের বুঝতে হবে, কোনো স্থান বা পরিস্থিতিতে তাদের অস্বস্তি হলে তা প্রকাশ করা উচিত, এবং এক্ষেত্রে তাদের কোনো ধরনের লজ্জাবোধ বা ভয় থাকবে না।
শুধু অভিভাবকদের দায়িত্ব নয়, সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের দায়িত্ব হলো শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। পরিবার, স্কুল, বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী—সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, যাতে শিশু ধর্ষণের মতো ঘটনা আর না ঘটে। আরও জরুরি হলো, শিশুদের প্রতি অত্যাচারের ঘটনাগুলো ছোট করে না দেখাটা। বরং, যতটা সম্ভব সতর্কতা এবং প্রাথমিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
আইনের কঠোর প্রয়োগ এক্ষেত্রে অপরিহার্য, তবে আইনের চেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে সমাজের সচেতনতা। পুলিশ, প্রশাসন, মিডিয়া—সবাইকে এই সমস্যা নিয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক পরিবর্তন আনতে হবে, যাতে আমরা শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে পারি।
শিশু ধর্ষণ শুধু একটি অপরাধ নয়, এটি মানবিক সংকট। এই সংকট মোকাবিলায় আমাদের সচেতনতা, দায়বদ্ধতা এবং একযোগে কাজ করার প্রয়োজন। শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ, তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রথম দায়িত্ব। যদি আমরা একসাথে কাজ করি, তবে একদিন আমরা একটি নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং আনন্দময় শৈশব নিশ্চিত করতে পারব।