
আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: পবিত্র মাহে রমজান মুসলিম উম্মাহর জন্য এক আশীর্বাদময় সময়। এই মাসে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের ওপর অশেষ রহমত, মাগফিরাত (ক্ষমা) এবং নাজাত (মুক্তি) প্রদান করেন। রমজানের প্রতিটি দশকেই রয়েছে বিশেষ বরকত ও দোয়ার গ্রহণযোগ্যতা। বর্তমানে আমরা রহমতের দশক শেষ করে, মাগফিরাতের দশকে প্রবেশ করতে যাচ্ছি।
রমজানের প্রথম দশকটি রহমতের দশক হিসেবে পরিচিত, যেখানে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের ওপর বিশাল রহমত নাযিল করেন। এই দশকে আল্লাহর কাছে দোয়া করলে তা দ্রুত কবুল হয়। মহান আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন:
“وَرَحْمَتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ”
(سورة الأعراف،)
“আমার রহমত সব কিছুকে শামল করে নিয়েছে।”
এই সময়, বান্দাদের জন্য এক বিশেষ সুযোগ হলো আল্লাহর কাছে তাদের ভুল-ত্রুটি মাফ চাওয়া এবং তার রহমত লাভ করা।
রমজানের দ্বিতীয় দশকটি মাগফিরাতের দশক হিসেবে পরিচিত, যেখানে আল্লাহ তার বান্দাদের পাপ মাফ করেন এবং তাদের সৎকর্মের প্রতি ইচ্ছা রাখেন। এই দশকে, আল্লাহর ক্ষমা অর্জন করা আরও সহজ হয়। হাদিসে এসেছে:
“اللهم اغفر لي، وارحمني، واهدني، وعافني، وارزقني”
(صحيح مسلم)
“হে আল্লাহ, আমাকে ক্ষমা করুন, আমাকে দয়া করুন, আমাকে পথপ্রদর্শন করুন, আমাকে সুস্থ রাখুন এবং আমাকে রিযিক দিন।”
এছাড়াও, এক হাদিসে আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেন:
“من صام رمضان إيمانًا واحتسابًا غفر له ما تقدم من ذنبه”
(صحيح البخاري)
“যে ব্যক্তি রমজান মাসে ঈমান ও ইচ্ছার সঙ্গে রোজা রাখে, তার পূর্ববর্তী পাপ মাফ করা হয়।”
এই সময়টি মুসলিমদের জন্য একটি বিশাল সুযোগ, কারণ আল্লাহ তাআলা তাদের পাপ মাফ করে দেন এবং তাদের আত্মশুদ্ধি ও পরিশুদ্ধি লাভের রাস্তা খুলে দেন।
মাগফিরাতের দশকে বিশেষ দোয়া
মাগফিরাতের দশকে কিছু বিশেষ দোয়া রয়েছে, যা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য পড়া উচিত। যেমন:
“اللهم اغفر لي”
“হে আল্লাহ, আমাকে ক্ষমা করুন।”
এছাড়া, দোয়া করতে হবে নিজের, পরিবারের এবং সারা পৃথিবীর মুসলিমদের জন্য:
“اللهم إني أسالك المغفرة والرحمة”
“হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে ক্ষমা ও রহমত চাইছি।”
রমজানের বিশেষ বরকত
রমজানে বিশেষভাবে দোয়া কবুল হওয়ার এক অমূল্য সময় থাকে। আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন:
“إِنَّ رَحْمَتَ اللَّهِ قَرِيبٌ مِّنَ الْمُحْسِنِينَ”
(سورة الأعراف، 7:56)
“নিশ্চয়ই আল্লাহর রহমত সদা সৎকর্মশীলদের নিকটে।”
এছাড়া, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“إذا دخل رمضان فتحت أبواب الجنة”
(صحيح البخاري)
“যখন রমজান মাস আসে, তখন জান্নাতের দরজা খোলা থাকে।”
এটি আমাদের জন্য বিশেষ এক সুযোগ, যা মাগফিরাতের দশকে আরো বেশি লাভ করা যায়।
পবিত্র রমজান মাসের রহমত ও মাগফিরাতের দশক আমাদের জন্য এক বিশাল সুযোগ, যা আমরা যদি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি, তাহলে আমাদের জীবনে আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা লাভ করা সম্ভব। তাই, এই সময়ের গুরুত্ব উপলব্ধি করে আমরা যেন আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তার কাছে তাওবা করি এবং তার রহমত ও ক্ষমা লাভ করার জন্য চেষ্টা করি।