
নিশ্চয়ই! এখানে সংবেদনশীল ও ইমোশনাল টোনে পুরো প্রতিবেদনটি সাজানো হলো:
আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: পটুয়াখালীতে, জুলাই আন্দোলনের শহীদ জসিম উদ্দিনের ১৭ বছরের কন্যা লামিয়া, ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর এক অসম্ভব মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে জীবনযাপন করছিলেন। অবশেষে, সেই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে তিনি নিজেই নিজের জীবন থেকে অবলীলায় বিদায় নিলেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে, রাজধানী ঢাকার শেখেরটেক এলাকায় তার ভাড়া বাসার নিজ কক্ষে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন লামিয়া।
মর্মান্তিক এই ঘটনার পর, দ্রুত তাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। দুমকি থানার ওসি মো. জাকির হোসেন রাত ১১টায় এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে, ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় নিজ বাড়ি থেকে নানাবাড়ি যাওয়ার পথে লামিয়া সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। তার সাহসিকতা ছিল অবিশ্বাস্য; তিনি নিজেই মামলা দায়ের করেছিলেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, সেই মামলা ও বিচারপ্রক্রিয়া কেবল তাকে আরও মানসিক চাপ ও হতাশার মধ্যে নিয়ে যায়।
পারিবারিক সদস্যরা জানাচ্ছেন, ধর্ষণের পর থেকেই লামিয়া সামাজিক লজ্জা এবং চরম মানসিক কষ্টে ভুগছিলেন। যখন তার প্রতি সমবেদনা এবং সহানুভূতির বদলে কেবল অভিযোগ এবং অপমানের ছায়া পড়েছিল, তখন তার হৃদয়ে ভাঙন ধরেছিল। অসহনীয় মানসিক চাপ ও বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা তাকে এমন এক হতাশার দিকে ঠেলে দেয়, যেখানে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যাই ছিল তার একমাত্র উপায় মনে হয়েছিল।
এক প্রতিবেশী, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, জানান, শনিবার সন্ধ্যায় মা-মেয়ে মিলে কাপড় কিনে বাড়ি ফিরবেন বলে পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু রাতের অন্ধকারে, ছোট মেয়েকে মাদরাসায় পাঠানোর পর বড় মেয়ে লামিয়া একাকী অবস্থায় জীবনের সাথে শেষ সম্পর্ক ছিন্ন করেন। প্রতিবেশীর ধারণা, হয়তো তার উপর ফোনে কোনো হুমকি এসেছে, যা তাকে এই চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে।
এদিকে, দুমকি থানার ওসি মো. জাকির হোসেন বলেন, “আমরা এই ঘটনায় অত্যন্ত দুঃখিত এবং নিহতের পরিবারকে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদান করছি। আমরা তদন্ত অব্যাহত রেখেছি।”
পটুয়াখালী জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান টোটন জানিয়েছেন, দুই আসামি ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে এবং তারা পটুয়াখালী জেলা কারাগারে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া চলছে।
শহীদ জসিম উদ্দিনের পরিবারসহ পুরো সমাজের দাবি, দ্রুততম সময়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। তারা আর কোনও বাবা-মায়ের সন্তান যেন এমন পরিস্থিতির শিকার না হয়, তার জন্য আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রত্যাশী।