
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজা উপত্যকায় ইসরা’ইলি বাহিনীর চালানো বোমা বর্ষণের এক বিভীষিকাময় ভয়াল রাতে নিহত হয়েছেন নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ৮১ জন ফিলিস্তিনি। দক্ষিণ গাজায় দুটি হাসপাতাল লক্ষ্য করে চালানো হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ জন, আর উত্তর গাজায় মধ্যরাতের পর থেকে বৃষ্টির মতো বোমা বর্ষণে নিহত হয়েছেন আরও ৫১ জন। বুধবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ গাজার ইউরোপিয়ান ও নাসের হাসপাতালের ওপর চালানো বোমা হামলায় নিহতদের মধ্যে একজন ফিলিস্তিনি সাংবাদিকও ছিলেন, যিনি চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, হাসপাতালের মতো সংবেদনশীল স্থানে হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও যুদ্ধনীতির ভয়াবহ লঙ্ঘন।
হাসপাতাল লক্ষ্য করে হামলার পরপরই উত্তর গাজার বিভিন্ন স্থানে টানা বিমান হামলা চালায় ইসরা’ইলি বাহিনী। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বলা হয়, এসব হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪৫ জন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরা’ইলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫২ হাজার ৯০৮ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৭২১ জন। শুধু গত দুই মাসেই (১৮ মার্চ থেকে ১৪ মে) প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৭৮০ জন, আহত হয়েছেন প্রায় ৭ হাজার ৭০০ জন।
জাতিসংঘের তথ্য বলছে, চলমান যুদ্ধের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ ইতোমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। পুরো উপত্যকার অধিকাংশ অবকাঠামো ধ্বংসপ্রাপ্ত বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।
ইসরা’ইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (ICJ)-এ গণহত্যার অভিযোগে ইসরা’ইলের বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে।
এতসব মানবিক বিপর্যয় ও আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও থেমে নেই ইসরা’ইলি আগ্রাসন। বর্বর এ হামলার বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে নিন্দা ও প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে, এবং গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক আহ্বান দিন দিন আরও জোরালো হচ্ছে।