
আওয়ার টাইমস নিউজ।
রাজনীতি: আওয়ামী লীগ ও বিএনপি—বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলকে নিয়েই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তার অভিযোগ, শুধু আওয়ামী লীগেরই নয়, বিএনপির রাজনীতিও এখন চলছে আওয়ামী লীগের অর্থায়নে।
শুক্রবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় কুমিল্লায় এক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন তিনি। সেখানে তিনি বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছি, কিন্তু তাদের টাকার জোর এখনো রয়ে গেছে। এই টাকাই আজ বিএনপির নেতাদের রাজনীতি চালানোর রসদ জোগাচ্ছে।
তিনি কুমিল্লার উদাহরণ টেনে বলেন, এখানে এমন অনেক উপজেলা আছে, যেখানে সব দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি আওয়ামী লীগের অর্থের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। বিএনপির নেতাদের বলছি—আমরা শত্রু নই, বরং আপনাদের সঠিক বাস্তবতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছি।
বক্তব্যে হাসনাত আবদুল্লাহ সরাসরি প্রশ্ন তোলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের ভূমিকা নিয়েও। তার কথায়, ‘যারা খুনে জড়িত, তারা বারবার জামিনে মুক্তি পাচ্ছে। বিচারকেরা কেন তাদের জামিন দিচ্ছেন? এর পেছনে কারা আছে, সেটা জাতির সামনে তুলে ধরুন। আপনি বলছেন আপনাকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না—তবে সেই বাধাগুলো প্রকাশ্যে আনুন।
তিনি আরো যোগ করেন, ‘আজও শহীদদের ঘরের সামনে ঘুরছে খুনিরা। এটা শুধু সরকারের ব্যর্থতা নয়, বরং আপনারও ব্যর্থতা। জানুয়ারিতে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথা ছিল, এখন মে মাস চলছে, এখনো সেটা হয়নি। বিচারের দাবি ছিল আমাদের সংস্কারের প্রথম ধাপ—সেটা কোথায়?
আসন্ন নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু নির্বাচন চাই না, আমরা চাই সুশাসনের সংস্কার। এই সংস্কার প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই হবে পরবর্তী নির্বাচন।
দেশের ওপর বিদেশি আধিপত্য প্রসঙ্গেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন। বলেন, ‘আমরা মানবিক করিডরের নামে কোনো ষড়যন্ত্র চাই না। ভারতের, পিণ্ডির কিংবা মার্কিন আধিপত্যে নয়—এই দেশ চলবে জনগণের ইচ্ছায়। পরাশক্তির হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না।
১৪ দলের বিষয়েও তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের স্পষ্ট অবস্থান দাবি করেন। বলেন, ‘আমরা সহযোগিতা করতে চাই, কিন্তু এখনও আহতদের পুনর্বাসন হয়নি, কর্মসংস্থান হয়নি, বিচারে অগ্রগতি নেই। আমরা আন্দোলনে না নামা পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপই দেখা যায় না।
এই ‘জুলাই সমাবেশ’-এ আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি, খেলাফতে মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি পার্টিসহ বিভিন্ন ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।