
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পশ্চিম গাজায় সমুদ্রতীরবর্তী একটি খোলা ক্যাফেতে ইসরাইলের ভয়াবহ বিমান হামলায় অন্তত ৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন বেশ কয়েক ডজন মানুষ। নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও সাংবাদিকও রয়েছেন।
সোমবার এই হামলা চালানো হয়, যেটি মূলত সাংবাদিক, অ্যাক্টিভিস্ট ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ব্যবহৃত একটি তাঁবুতে গড়া খোলা ক্যাফে ছিল।
গাজার হামাস-শাসিত সিভিল ডিফেন্সের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে জানান, আল-বাকা ক্যাফেটেরিয়া থেকে এখন পর্যন্ত ২০টি মরদেহ এবং বহু আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে। পরবর্তীতে আরও ১৯ জনের মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, বিস্ফোরণের ফলে একটি গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়েছে এবং উদ্ধার কাজ এখনো চলমান।
নিহত সাংবাদিক ইসমাইল আবু হাতাবসহ ক্যাফেতে অবস্থানরত অনেক নারী ও শিশু প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় একটি প্রোডাকশন হাউসের ক্যামেরাম্যান আজিজ আল-আফিফি বলেন, “আমি ক্যাফেটির দিকে যাচ্ছিলাম ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য। মাত্র কয়েক মিটার দূরে থাকতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। ছুটে গিয়ে দেখি, আমার পরিচিত সহকর্মীরা মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। চারপাশে রক্ত, আর্তনাদ আর লাশ।”
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়, যা ওই এলাকায় আঘাত হানে। ভিডিও ফুটেজে হামলার পরের ভয়াবহ দৃশ্য ফুটে উঠেছে—লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে, ধ্বংসস্তূপ আর ছিন্নভিন্ন মানবদেহ।
আল-বাকা ক্যাফেটির অবস্থান ছিল গাজার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে। এটি ছিল ইন্টারনেট সংযুক্ত কাজের উপযোগী শান্তিপূর্ণ জায়গা। এখানে প্রতিদিন অনেক সাংবাদিক ও দূরবর্তী কর্মী বসে কাজ করতেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এই হামলার আগে রাতভর গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরাইল একাধিক বিমান হামলা চালায়, যার ফলে শত শত ফিলিস্তিনি পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
আল-আহলি হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের মধ্যে শিশু ও বয়স্করাও রয়েছেন।
এই ভয়াবহ হামলা এমন এক সময়ে ঘটল, যখন চলতি বছরের মার্চে যুদ্ধ ফের শুরুর পর ইসরায়েল সবচেয়ে বড় গাজা ছাড়ার নির্দেশ দেয়। যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বেড়েই চলেছে।