
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের টার্গেটেড ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের বিজ্ঞান ও সামরিক গবেষণার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র ‘ভাইসমান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স’ কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে। তেল আবিবের দক্ষিণের রিহবেত শহরে অবস্থিত এই ইনস্টিটিউটটি ছিল ইসরাইলের গবেষণা ও প্রযুক্তির ‘মেরুদণ্ড’ হিসেবে পরিচিত। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত মিডিয়া প্রেস টিভির বরাতে এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
ইরান ১৫ জুন পরিচালিত হামলায় অত্যন্ত নিখুঁতভাবে কমপ্লেক্সটির বহু গুরুত্বপূর্ণ ভবনে আঘাত করে। এতে পদার্থবিদ্যা, বায়োটেকনোলজি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের বহু গবেষণাগার একেবারে বিধ্বস্ত হয়ে যায়। ইসরাইলি চ্যানেল-১৩–এর সাথে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট আলোন চেন জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩০০ মিলিয়ন থেকে ৫৭০ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে হতে পারে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন হৃদযন্ত্র পুনর্জন্ম (কার্ডিয়াক রিজেনারেশন) বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এলদাদ জাহর, যার ২২ বছরের গবেষণার সম্পূর্ণ ফল—হৃৎপিণ্ডের টিস্যু, অ্যান্টিবডি, ডিএনএ/আরএনএ নমুনা ও ল্যাব-উৎপন্ন ভাইরাস—সবকিছুই ধ্বংস হয়ে গেছে।
প্রেস টিভি আরও জানিয়েছে, কমপ্লেক্সের প্রায় ৯০ শতাংশ ভবন ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। অন্তত ৪৫টি গবেষণাগার, যেগুলোর মধ্যে ছিল জীবনবিজ্ঞান, অণুজীববিজ্ঞান ও স্নায়ুবিজ্ঞান ল্যাব, তা ধ্বংস হয়ে গেছে। এসব ল্যাবে সংরক্ষিত ছিল বহু মূল্যবান ও অপূরণীয় সেল লাইন ও টিস্যু স্লাইড।
এছাড়া নবনির্মিত রাসায়নিক ও ভৌতবিজ্ঞান গবেষণাগার, যা চালু হওয়ার কথা ছিল এ বছরই, তাও সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়। পার্শ্ববর্তী ভবনে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতে ‘প্ল্যানেটারি সায়েন্সেস ভবন’ও শকওয়েভে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করলেও বিভিন্ন ফুটেজ ও ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ইনস্টিটিউটটি এক ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে পড়েছে। চ্যানেল-১৩ জানিয়েছে, ইসরায়েলি নাগরিকরাও এখনো পুরো ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে জানেন না।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরান এই হামলার মাধ্যমে শুধু ইসরায়েলের সামরিক শক্তিকেই নয়, বরং তার বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মেরুদণ্ডকে চূর্ণ করেছে। এটি ছিল সামরিক বাহিনীর চেয়েও বেশি কৌশলগত একটি আঘাত।