আওয়ার টাইমস নিউজ।
ইসলামী ডেস্ক: “সূরা মুলক” পবিত্র কুরআনের ৬৭ নম্বর সূরা এবং ৩০টি আয়াত নিয়ে গঠিত। এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এই সূরাটি বিশেষ ফজিলতপূর্ণ এবং ইসলামে এর পাঠের জন্য বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে। হাদিস অনুযায়ী সূরা মুলকের কিছু ফজিলত নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
১. কবরের শাস্তি থেকে রক্ষা পাওয়া।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এরশাদ করেন:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:
“إِنَّ سُورَةً مِنَ الْقُرْآنِ، ثَلَاثُونَ آيَةً، شَفَعَتْ لِصَاحِبِهَا حَتَّى غُفِرَ لَهُ، وَهِيَ تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ.”
(সুনান আত-তিরমিজি: ২৮৯১)
অর্থ: কুরআনের একটি সূরা আছে, যার ৩০টি আয়াত তার পাঠকারীকে সুপারিশ করবে, যতক্ষণ না তাকে ক্ষমা করা হয়। সেটি হলো (সূরা মুলক)।
২. কবরের শাস্তি থেকে রক্ষা করার ক্ষমতা।
রাসুলুল্লাহ (সা:) আরও এরশাদ করেন:
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:
“سُورَةُ تَبَارَكَ هِيَ الْمَانِعَةُ، تَمْنَعُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ.”
(সুনান النسائي: ২০৬৭)
অর্থ: সূরা মুলক হলো কবরের শাস্তি থেকে রক্ষা করার মাধ্যম।
৩. শাফায়াত করার ক্ষমতা।
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন:
“لَوْ أَنَّ قُرْآنًا يُوضَعُ فِي الْقُبُورِ لَكَانَ تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ.”
(মুসনাদে আহমদ: ৭৬৮০)
অর্থ: যদি কুরআনের কোনো সূরা কবরে রাখা হতো (কবরের শাস্তি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য), তবে তা হতো সূরা মুলক।
৪. প্রতিদিন রাতের তিলাওয়াতের গুরুত্ব।
হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত:
عَنِ جَابِرٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَنَامُ حَتَّى يَقْرَأَ تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ.
(সুনান আত-তিরমিজি: ২৮৯২)
অর্থ: রাসুলুল্লাহ (সা:) ঘুমানোর আগে সূরা মুলক তিলাওয়াত না করে কখনো ঘুমাতেন না।
৫. আখিরাতে নাজাত লাভের মাধ্যম
রাসুলুল্লাহ (সা:) আরও এরশাদ করেন:
“سورة تَبَارَكَ هي المجادلة تُجادِلُ عن صاحبها.”
(মুসনাদে আহমদ: ৭৬৮১)
অর্থ: সূরা মুলক হলো বিতর্ককারী সূরা, এটি তার পাঠকারীর পক্ষে আল্লাহর কাছে বিতর্ক করবে (শাফায়াত করবে)।
তিলাওয়াতের ফজিলত:
প্রতিদিন রাতের বেলা এই সূরাটি পাঠ করলে কবরের শাস্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এটি হৃদয়ে তাকওয়া বৃদ্ধি করে এবং আল্লাহর প্রতি ভয় ও ভালোবাসার অনুভূতি জাগ্রত করে।
সূরা মুলক একজন মুসলিমের জন্য আখিরাতের নাজাত লাভের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এটি প্রতিদিনের আমলে অন্তর্ভুক্ত করলে দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ লাভ করা সম্ভব। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এ সূরাটি বেশি বেশি তিলাওয়াত করার তাওফিক দান করুন।
আমিন।