আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: গাজীপুরের টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার মাঠ দখল নিয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় তাবলিগ জামাতের ভারতীয় আমির সাদ’পন্থী গ্ৰুপের শীর্ষ বাংলাদেশী নেতা মুয়াজ বিন নূরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইস্কান্দর হাবিবুর রহমান।
তিনি জানান, এই মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
১৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে, বিশ্ব ইজতেমার মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে সাদপন্থীরা সাধারণ মুসল্লিদের ওপর বর্বর হামলা চালায়। এ ঘটনায় চারজন নিহত এবং অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায়, আলমি শূরার সদস্য এস এম আলম হোসেন টঙ্গী পশ্চিম থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরও কয়েকশ’ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
মামলার বাদী এস এম আলম হোসেন কিশোরগঞ্জের সদর উপজেলার গাইটাল গ্রামের বাসিন্দা। তিনি মাওলানা জুবায়ের অনুসারী এবং কিশোরগঞ্জের আলমি শূরার সদস্য। এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, সাদপন্থীরা সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ২০ থেকে ২৪ ডিসেম্বর টঙ্গী ময়দানে তাদের অনুসারীদের জড়ো করার জন্য ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচারণা চালায়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, প্রধান আসামি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম চিঠির মাধ্যমে সারা দেশে সাদপন্থীদের নির্দেশ দেন ২০ থেকে ২৪ ডিসেম্বর টঙ্গী ময়দানে জড়ো হওয়ার জন্য। অন্যদিকে, আরেক আসামি আব্দুল্লাহ মনসুর ফেসবুক লাইভে ঘোষণা করেন, যদি মাওলানা সা’দকে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে অংশ নিতে বাধা দেওয়া হয়, তবে তারা তা মানবে না।
উসকানিমূলক এই কর্মকাণ্ডের পর, ১৮ ডিসেম্বর রাত ৩টার দিকে, সাদপন্থীরা টঙ্গীতে আলমি শূরার সদস্যদের ওপর হিংস্র হামলা চালায়। এতে তিন জেলার তিনজন মুসল্লি নিহত হন।
নিহতরা হলেন:
আমিনুল ইসলাম বাচ্চু (৬৫), কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া।
বেলাল হোসেন (৬০), ফরিদপুর।
তাজুল ইসলাম (৫০), বগুড়া।
এছাড়া আরও অর্ধশতাধিক ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। নিহতদের কুপিয়ে এবং পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে জানা গেছে।
সংঘর্ষের ঘটনার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টঙ্গী ময়দানে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। মামলার অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি ইস্কান্দর হাবিবুর রহমান।
এই ঘটনায় স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিশ্ব ইজতেমার মতো পবিত্র আয়োজনকে কেন্দ্র করে এমন সহিংসতা ইসলামি সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।