
আওয়ার টাইমস নিউজ।
স্বাস্থ্য: বর্তমানে মশা তাড়ানোর জন্য কয়েল ব্যবহারের প্রবণতা শহর ও গ্রামে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে কয়েলের ধোঁয়া শরীরের জন্য যে কতটা ক্ষতিকর হতে পারে, তা হয়তো অনেকেই জানেন না। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন—কয়েল ব্যবহারের ফলে শ্বাসতন্ত্র, স্নায়ু, চোখ, এবং এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) কয়েলের ধোঁয়াকে একটি “কার্সিনোজেনিক” উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করেছে, যার মানে হলো, এটি দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারের সৃষ্টি করতে পারে। কয়েলের মধ্যে থাকা Pyrethroid নামক রাসায়নিক শরীরের স্নায়ু কোষের ওপর প্রভাব ফেলে, যা শারীরিক অস্থিরতা ও মাথাব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া, কয়েলের ধোঁয়া শ্বাসনালীর বিভিন্ন সমস্যা যেমন ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি, এবং শ্বাসকষ্ট সৃষ্টি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কয়েলের ধোঁয়ার মধ্যে থাকা পালমিটেট, বেঞ্জোপাইরেন এবং অন্যান্য রাসায়নিক উপাদানগুলো ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। নিয়মিত কয়েল ব্যবহারের ফলে এই রাসায়নিক উপাদানগুলো শ্বাসের সাথে শরীরে প্রবাহিত হয়ে শরীরের ভিতরে জমতে থাকে এবং দীর্ঘমেয়াদে স্নায়ুতন্ত্র, ফুসফুস, চোখ, এবং মস্তিষ্কের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
শুধু তাই নয়, গর্ভবতী নারীরা যদি কয়েলের ধোঁয়া শ্বাসের মধ্যে গ্রহণ করেন, তবে তা গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই ধোঁয়া শ্বাসনালীতে প্রবাহিত হয়ে গর্ভস্থ শিশুর বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে, এবং সাধারণ শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, “কয়েলের ধোঁয়া দীর্ঘমেয়াদে সিগারেটের সমান ক্ষতিকর হতে পারে। এটি বিশেষত শ্বাসকষ্টে ভোগা ব্যক্তিদের জন্য বিপজ্জনক, এবং নিয়মিত কয়েল ব্যবহারে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।”
কয়েল ব্যবহারের ফলে শরীরে যে বিপদ ঘটতে পারে, তা থেকে রক্ষা পেতে অনেকেই প্রাকৃতিক উপায় বা বিকল্প ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে আসছেন। তবে, এক্ষেত্রে কয়েলের বিকল্প হিসেবে আরও নিরাপদ উপায় ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
এখন সময় এসেছে, কয়েলের ধোঁয়া থেকে নিজেকে এবং পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করার। একে নিষ্ক্রিয় করে প্রাকৃতিক উপায় বা নিরাপদ বিকল্পের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।