
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজা এখন এক মৃত্যুপথযাত্রী শহরের নাম। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, তারা গাজায় শেষ খাদ্য সরবরাহ পৌঁছে দিয়েছে। আর কিছু অবশিষ্ট নেই।
এই সহায়তা কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিদিন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি খাবার পেত। তাদের জন্য চাল, ডাল, তেল—সাধারণ কিছু উপকরণই ছিল জীবন রক্ষার বড় সম্বল। এই দাতব্য রান্নাঘরগুলোর সহায়তায়ই চলছিল তাদের দিন। কিন্তু এখন সেই রান্নাঘরগুলোও বন্ধ হয়ে যাবে—কারণ কোনো খাদ্য আর আসছে না, কিছুই নেই।
ইসরায়েল গত ২ মার্চ থেকে গাজার সব রকমের সরবরাহ—খাদ্য, পানি, জ্বালানি ও ওষুধ—সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে প্রায় দুই মাস ধরে এক নিঃশ্বাসে বেঁচে ছিল গাজাবাসী—বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির দেওয়া অল্প কিছু খাবারেই। কিন্তু এখন সেই শেষ আশাটুকুও নিভে গেল।
জাতিসংঘ বলছে, গাজার প্রায় ২০ লাখ মানুষের মধ্যে ৮০ শতাংশই নির্ভর করছিল এই রান্নাঘরের খাবারের উপর। এখন তারা সবাই চরম খাদ্যসংকটে পড়েছে। অনাহারে মৃত্যুর প্রহর গুনছে শিশুরা, নারীরা আর অসুস্থ বৃদ্ধেরা।
এদিকে, একবেলার খাবারের আশায় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলো জানে না, তাদের জন্য আর কিছু আসবে না। শিশুর মুখে দুধ নেই, বৃদ্ধ বাবার মুখে এক চামচ ভাতও নেই। মা তার শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে কাঁদে—তাকে কী খাওয়াবে?
গাজার এই নিরীহ মানুষের বিভীষিকাময় কষ্টের দৃশ্যগুলো কি বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো দেখতে পাচ্ছেনা, ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা নেতারা, সভ্যতার দাবিদার সমাজ—তারা কী সত্যিই দেখতে পাচ্ছে না গাজার এই মৃত্যু-নাটক? নাকি তারা ব্যস্ত নিজেদের স্বার্থ নিয়ে?
গাজার এই নিঃশব্দ মৃত্যুর মিছিল আমাদের সকলের বিবেকের সামনে এক কঠিন প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়—
“মানুষের জীবনের চেয়ে রাজনীতি বড় হয়ে গেছে?”