২৮শে এপ্রিল, ২০২৫, ২৯শে শাওয়াল, ১৪৪৬
সর্বশেষ
কর্মস্থলে শান্তি এবং মনোযোগ আনার জন্য ৫টি কার্যকরী মাইন্ডফুলনেস কৌশল
ইরানের সংসদ সদস্যের অভিযোগ: ভয়াবহ বিস্ফোরণের পেছনে ই*স*রা*য়ে*লের হাত রয়েছে
শাহিদ রাজারি বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর আহতদের দেখতে হাসপাতালে গেলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান
কাতার ও জাতিসংঘের তীব্র আহ্বান: গাজার অবরোধ তুলে নিন, না হলে খাবারের অভাবে মৃত্যু নিশ্চিত!
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের আহ্বান: ৩৬টি কোম্পানির প্লট-ফ্ল্যাট না কেনার পরামর্শ
টাইটানিক থেকে বেঁচে ফেরা যাত্রীর চিঠি বিক্রি হলো ৫ কোটি টাকায়: কী রহস্য লুকিয়ে ছিল ওই চিঠিতে?
ভারতীয়দের রক্ত “ফুটছে” বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মোদি
পাকিস্তান সীমান্তে সন্ত্রাসী হামলায় ৫৪ জন নিহত,ভারতের ইন্ধন সন্দেহ
ফ্রান্সে মসজিদে নামাজরত মুসল্লিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, হামলাকারীর ফোনে ভিডিও
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন ড. ইউনূস” সাথে সাথে নরেন্দ্র মোদী বললেন না পারব না

ভালোবাসার শিকলে বন্দি জীবন: একটি অবহেলিত হৃদয়ের গল্প

দায়িত্বহীন প্রতিশ্রুতি হলো ভালোবাসার সবচেয়ে নির্মম প্রতারণা

আওয়ার টাইমস নিউজ।

ডেস্ক রিপোর্ট: কোন এক সময় ভেবেছিল, ভালোবাসার টানে দু’জনের জীবন এক হয়ে যাবে। সুখের সংসারে রাঙাবে নতুন স্বপ্ন। কিন্তু ভাগ্য হয়তো অন্য কিছু লিখে রেখেছিল। কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার দেওচান্দী গ্রামের ১৫ বছরের এক কিশোরীর গল্প যেন হাজারো নিঃস্ব, পরাজিত ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি।

চার বছর আগে পাশের গ্রামের হাইমুলের সঙ্গে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। অটোচালক হাইমুলের সঙ্গেই সে ভাগ করে নিয়েছিল তার শৈশবের স্বপ্ন, কৈশোরের আবেগ। সম্পর্কের গভীরতা এতটাই বেড়েছিল যে, সবটুকু বিশ্বাস করে মেয়েটি নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছিল। ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি পেয়ে নির্ভার মনে নিজেকে তার হাতে সমর্পণ করেছিল—ভেবেছিল, সে-ই তার জীবনসঙ্গী হবে।

কিন্তু সেই ভালোবাসার গল্প শেষ হলো নির্মমভাবে। সম্পর্কের কথা জানাজানি হওয়ার পর, দায়িত্বের বদলে হাইমুল হলো বেপরোয়া। প্রেমিকার হাত ছেড়ে সে পালিয়ে গেল। প্রতারণার ভার নিতে না পেরে মেয়েটি আত্মহত্যার চেষ্টা করল। কিন্তু সৎ মা ও দাদীর তৎপরতায় বেঁচে গেল সে।

ভয় আর আশঙ্কায় মেয়েটিকে পায়ে শিকল পরিয়ে ঘরের বারান্দায় আটকে রাখা হয়—কেবল বাঁচিয়ে রাখার তাগিদে, যেন আবার কোনো দূর্ঘটনা না ঘটে। একাকী মেয়েটির আর কেউ নেই। মা মারা গেছেন ছোটবেলায়, বাবা রয়েছেন বিদেশে। এই সংসারে শুধু সৎ মা আর দাদীকে পেয়েছে সঙ্গী হিসেবে। তবুও বুকের ভেতর জমে থাকা ভালোবাসার সেই নদী শুকায়নি। এখনো সে কাঁদে হাইমুলের জন্য, এখনো একটিবার তার ফিরে আসার আশায় চেয়ে থাকে দুয়ারের দিকে।

“আমি তাকে আমার জীবন দিয়েছি। এখন সে ছাড়া কিছুই ভাবতে পারি না,” কাঁদতে কাঁদতে বলেছে মেয়েটি। তার বিশ্বাস, তার ভালোবাসা ছিল নিখাদ, নিঃস্বার্থ। অথচ তার বিনিময়ে পেয়েছে শিকল, অপমান আর সামাজিক বঞ্চনা।

ভালোবাসা যখন অবহেলায় দগ্ধ হয়, তখন একটি হৃদয় শুধু ভাঙে না, পুরো একটা জীবন ভেঙে পড়ে। বিশ্বাসের ওপর দাঁড়িয়ে যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে, বিশ্বাস ভেঙে গেলে তা শুধু স্মৃতির বেদনা হয়ে থাকে।

এই কিশোরীর গল্প শুধু একটি মেয়ে বা একটি গ্রামের নয়, এটা আমাদের সমাজের আয়না। যেখানে ভালোবাসা একপাক্ষিক হয়, সেখানে শুধু কান্না আর নিঃসঙ্গতা অপেক্ষা করে।

এই ঘটনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়—
ভালোবাসা মানেই সমস্ত কিছু নিঃশেষ করে ফেলা নয়। অন্ধবিশ্বাসে নিজেকে বিলিয়ে দিলেই যে প্রতিদান মিলবে, তা নয়। ভালোবাসার পাশাপাশি নিজের আত্মসম্মানকেও ভালোবাসা উচিত। নিজের জীবনের দায়িত্বও নিজের হাতে রাখতে হয়।

ভালোবাসা হোক দায়িত্বশীল, সম্মানজনক।
ভালোবাসার নামে যেন আর কোন মেয়েকে তার স্বপ্ন, তার জীবন এভাবে শিকলবন্দী করতে না হয়।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

ফেসবুক পেজ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

Archive Calendar
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০  

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত