
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা ক্রমেই যুদ্ধের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সীমান্তে প্রতিদিন গোলাগুলি, কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন, ভিসা বাতিল, পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত এবং আকাশসীমা বন্ধের মতো পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে উত্তপ্ত দক্ষিণ এশিয়া। এমন সময়ে এবার মুখ খুলেছে আফগানিস্তান।
আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ সেন্টারের উপপরিচালক হেকমাতুল্লাহ জালান্দ কাবুলের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেন—“ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা আমাদের অঞ্চলের জন্য সরাসরি হুমকি। আমরা ভারসাম্যপূর্ণ নীতির আলোকে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।” তিনি আরও জানান, আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ হয়ে গেলে আফগান বাণিজ্য বড় ধাক্কা খাবে।
এদিকে, ২২ এপ্রিল পহেলগামে ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তোলে ভারত। ইসলামাবাদ যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করে নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের প্রস্তাব দেয়, তবু দিল্লি একের পর এক কড়া পদক্ষেপ নেয়—সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, ভিসা বাতিল এবং সীমান্ত বন্ধ করে পাকিস্তানিদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
পাল্টা জবাব হিসেবে পাকিস্তানও সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের প্রতিক্রিয়ায় ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি কার্যত স্থগিত করে, ভারতের জন্য আকাশসীমা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ জানান, ভারতের পানি চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্তকে ইসলামাবাদ যুদ্ধ ঘোষণার সামিল হিসেবে দেখছে। তিনি বলেন, “পানির অধিকারের প্রশ্নে পাকিস্তান এক চুলও ছাড় দেবে না।”
অন্যদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “পেহেলগামের হামলার পর প্রতিটি ভারতীয়ের রক্ত ফুটছে। হামলায় জড়িতদের কঠিনতম পরিণতি ভোগ করতে হবে।” তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সীমান্তে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এখনো পর্যন্ত ভারত কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। ফলে, আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের একতরফা সিদ্ধান্তগুলো প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তবে এই উত্তেজনা যদি সামরিক সংঘর্ষে রূপ নেয়, তাহলে তা গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলবে—এমনটাই মনে করছেন কূটনীতিকরা।