
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলে ফিরে নিরাপদ থাকার আশা ছিল তার। কিন্তু বাস্তবতা হল আরও এক দুঃস্বপ্ন। ২৩ বছর বয়সী ফরাসি বংশোদ্ভূত ইসরায়েলি তরুণী মিয়া শেম, যিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হাতে অপহৃত হয়ে গাজায় বন্দি ছিলেন দীর্ঘ ৫৪ দিন, সেই বন্দিদশা থেকে মুক্তির পর ইসরায়েলেই ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
চ্যানেল ১২-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মিয়া জানান, বন্দিদশা থেকে ফিরে তেল আবিবে তার বাসার পাশে এক জিমে ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক হিসেবে পরিচিত এক ফিটনেস ইনফ্লুয়েন্সারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। ওই ব্যক্তি তাকে জানান, হলিউডের এক প্রযোজকের সঙ্গে তার পরিচয় আছে এবং মিয়ার বন্দি জীবনের গল্প নিয়ে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে।
এই আস্থার জায়গা থেকেই মিয়া তার জিমে তিনটি প্রশিক্ষণ সেশন নেন। এরপর একদিন সেই প্রশিক্ষক তাকে তার বাসায় যেতে বলেন, কারণ ‘প্রযোজক দেখা করতে আসবেন।’ কিন্তু সেই দিনই ঘটে বিভীষিকাময় ঘটনা। মিয়া অভিযোগ করেন, তাকে মাদক খাইয়ে অচেতন করে ধর্ষণ করা হয়।
সাক্ষাৎকারে কাঁপা গলায় মিয়া বলেন, “আমি মনে করতে পারছি না সে কখন ঘরে প্রবেশ করেছে। তবে আমার শরীর জানে কী হয়েছে। আমি দেহে যন্ত্রণার ছাপ অনুভব করি, আর এটাই প্রমাণ আমার সঙ্গে কী হয়েছিল।”
তিনি আরও জানান, অচেতন অবস্থায় ঘরে আরও একজন পুরুষ থাকার সম্ভাবনা ছিল, তবে কিছু স্পষ্ট মনে নেই। ঘটনার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়া মিয়া নিজেকে ঘরের মধ্যে বন্দি করে রেখেছিলেন।
মার্চ মাসে মিয়া পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন এবং মেডিকেল রিপোর্টে যৌন সহিংসতার প্রমাণ মেলে। অভিযুক্ত ফিটনেস প্রশিক্ষককে পুলিশ গ্রেপ্তার করে, যিনি ৩০-এর কোঠায় এবং সামাজিক মাধ্যমে বেশ পরিচিত। তার ক্লায়েন্ট তালিকায় রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ বহু সেলিব্রিটি। তবে, প্রাথমিক পর্যায়ে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তদন্ত এখনও চলমান।
বর্তমানে মিয়া মানসিক চিকিৎসার পাশাপাশি একটি বই লেখার কাজ করছেন, যেখানে তিনি নিজের অভিজ্ঞতা ও এই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরবেন। তিনি বলেন, “অনেক মানুষ আমার গল্প জানতে চায়, তাই আমি বলছি। কিন্তু আমি জানি, আমি এখন আর সেই মানুষটি নই, যে বন্দিদশার আগেও ছিলাম, মুক্তির পরও হতে চেয়েছিলাম।”
সূত্র: Times of Israel