
আওয়ার টাইমস নিউজ।
লাইফস্টাইল: প্রচণ্ড গরমের এই সময়ে ঘামাচি ও চুলকানির সমস্যা যেন এক সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শরীরে ঘাম জমে যাওয়া, ভ্যাপসা গরমের মধ্যে ত্বক আঠালো হয়ে যাওয়া, এবং এসব কারণে নানা রকম অস্বস্তি ও ত্বক সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঘামাচি বা চুলকানি, যা মূলত ত্বকে ফুসকুড়ি বা এলার্জির মতো প্রদাহের সৃষ্টি করে, অনেকেরই দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে, এসব সমস্যা কেন হয় এবং এর থেকে মুক্তি পেতে আমরা কি পদক্ষেপ নিতে পারি, তা নিয়ে আজকে আলোচনা করা হবে।
ঘামাচি ও চুলকানি কেন হয়?
ঘামাচি বা চুলকানি মূলত শরীরের ত্বকে অতিরিক্ত ঘাম জমে থাকার কারণে হয়। গরমের সময় শরীরের ত্বক ঘাম করতে থাকে, এবং ঘাম যখন ত্বকের ক্ষুদ্র গলিতে আটকে যায়, তখন তা ফুসকুড়ি বা চুলকানি তৈরি করে। এর পেছনে মূল কারণগুলো হলো:
১. ঘামের অতিরিক্ত পরিমাণ: গরমের দিনে শরীর থেকে ঘাম বের হয়ে ত্বকে জমে থাকে, যা ফুসকুড়ি বা চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে।
২. অস্বাস্থ্যকর পোশাক: টাইট বা খুব টাইট পোশাক পরলে ত্বক ঘামাচি ও চুলকানি বাড়াতে পারে, কারণ বাতাস ঠিকভাবে প্রবাহিত হতে পারে না।
৩. ত্বকের আর্দ্রতা: ত্বকের আর্দ্রতা বা স্যাঁতসেঁতে অবস্থা বেশি থাকলে তা ত্বকে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে।
৪. এলার্জি প্রতিক্রিয়া: কিছু মানুষের ত্বক গরম বা বিশেষ উপাদানগুলির প্রতি এলার্জি প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে, যা ঘামাচি সৃষ্টি করে।
প্রতিকার এবং যত্ন:
ঘামাচি বা চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে কিছু সহজ এবং কার্যকরী পদ্ধতি রয়েছে। এখানে কিছু সুপারিশ:
১. ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করুন: প্রতিদিন ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ত্বকের সংক্রমণ কমে। গোসলের পানিতে বরফও মিশিয়ে নিতে পারেন।
২. মেডিকেটেড ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করুন: চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করলে ঘামাচি বা চুলকানি থেকে আরাম পাওয়া যায়। এটি ত্বকের অতিরিক্ত ঘাম শুষে নেয়।
৩. অ্যালোভেরা ও চন্দন ব্যবহার করুন: অ্যালোভেরা এবং চন্দন ত্বক ঠান্ডা করে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। বিশেষত, গরমে এই উপাদানগুলো ত্বকের সুরক্ষায় খুবই কার্যকর।
৪. সুন্দর পোশাক পরিধান করুন: গরমের সময় ঢিলেঢালা, আরামদায়ক পোশাক পরুন। টাইট পোশাক ত্বকে ঘামাচি এবং চুলকানি বাড়াতে পারে।
৫. শরীর হাইড্রেটেড রাখুন: প্রচুর পানি পান করা জরুরি, কারণ গরমে শরীরের পানি শুষ্ক হয়ে যেতে পারে এবং চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে। ফলমূল যেমন তরমুজ, আম, শসা নিয়মিত খাওয়া উচিত।
৬. বেকিং সোডা ব্যবহার করুন: বেকিং সোডা ত্বকের প্রদাহ এবং চুলকানি কমাতে কার্যকরী। পানির সঙ্গে মিশিয়ে গোসল করলে ত্বকে আরাম পাবেন।
৭. চিকিৎসকের পরামর্শ: যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে বা মারাত্মক আকার ধারণ করে, তাহলে অবশ্যই একজন ত্বকবিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।
শেষ কথা:
গরমে ঘামাচি ও চুলকানি একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি অত্যন্ত অস্বস্তিকর। তবে, কিছু সাধারণ যত্ন এবং সঠিক পদ্ধতিতে আমরা এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি। যেহেতু গরমকাল আমাদের ত্বকের জন্য বেশ কঠিন হতে পারে, তাই প্রতিদিন সঠিক যত্ন নেয়ার মাধ্যমে ত্বককে সুস্থ রাখা সম্ভব।