
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক::এই যুগে যেখানে হজ পালনের জন্য মানুষ উড়োজাহাজে উড়ছে, সেখানেই চার সাহসী মুসলিম দেখালেন এক অবিশ্বাস্য দৃষ্টান্ত। ইউরোপ থেকে ঘোড়ায় চড়ে হাজারো মাইল পাড়ি দিয়ে তারা পৌঁছালেন সৌদি আরবের মক্কায়—শুধু হজ পালনের উদ্দেশ্যে।
এই চমকপ্রদ যাত্রার সূচনা হয়েছিল স্পেন থেকে। পথ পাড়ি দিতে হয়েছে ইতালি, স্লোভেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, মন্টিনিগ্রো, কসোভো, উত্তর মেসেডোনিয়া, বুলগেরিয়া, গ্রিস, তুরস্ক এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার মতো দেশ। সাড়ে তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এই হজযাত্রায় তারা অতিক্রম করেছেন মরুভূমি, পাহাড় ও সীমান্তের দুরূহ পথ।
চারজনের মধ্যে যিনি মূল পরিকল্পনাকারী, তার নাম আবদুল্লাহ হার্নান্দেজ। মাত্র ২৪ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন তিনি। ভূগোল অধ্যয়ন করতে গিয়ে কোরআনের আয়াতে প্রভাবিত হয়ে হৃদয়ে স্থান দেন ইসলামী আদর্শকে। তখনই মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন—একদিন ঘোড়ায় চড়ে হজে যাবেন, ঠিক প্রাচীন আন্দালুসীয় মুসলমানদের মতো।
তার এই স্বপ্নে সঙ্গী হন দুই বন্ধু—আবদেলকাদের হারকাসি ও তারিক রদ্রিগেজ। পরে তাদের দলে যুক্ত হন মরক্কোর এক মুসলিমও। প্রায় ৮ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে অবশেষে তারা সৌদি আরবের আল হাদিথাহ সীমান্তে পৌঁছালে সেখানকার কর্মকর্তারা তাদের অভ্যর্থনা জানান সৌদি কফি, ফুল ও রিফ্রেশমেন্ট দিয়ে।
সৌদি হজ কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, যেভাবেই হাজিরা আসুক না কেন—বিমান, জাহাজ বা ঘোড়ায়—প্রত্যেককেই সর্বোচ্চ সেবা দেওয়া হবে।
চার যুবকের এই যাত্রা শুধু একটি হজ পালনের ঘটনা নয়, এটি যেন ইতিহাস আর ঈমানের এক জীবন্ত চিত্র। অনেকে বলছেন, তারা যেন ৫০০ বছর আগের মুসলিম ঐতিহ্যের পুনর্জাগরণ ঘটিয়েছেন। তাদের এই সাধনা আর সাহস বর্তমান প্রজন্মের জন্য এক অনুপ্রেরণার নাম হয়ে উঠেছে।