
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে ফের চরম উত্তেজনায় জড়িয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরাশক্তি—ভারত ও পাকিস্তান। জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার জের ধরে মঙ্গলবার (৬ মে) মধ্যরাতে পাকিস্তানের ভেতরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারতীয় সামরিক বাহিনী। পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও ভারতে চালায় তীব্র গোলাবর্ষণ। সংঘর্ষে দুই দেশে প্রাণ হারিয়েছেন মোট ৪১ জন, আহত হয়েছেন শতাধিক।
বুধবার (৭ মে) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ভারতের হামলায় পাকিস্তানে অন্তত ২৬ জন নিহত এবং ৪৬ জন আহত হয়েছেন। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানিয়েছেন, একসঙ্গে ছয়টি এলাকায় চালানো হয় এই হামলা, যা মাত্র ২৫ মিনিটে ঘটে।
জবাবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ভারতশাসিত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর তীব্র গোলাবর্ষণ শুরু করে। এতে পুঞ্চ ও মেন্ধার এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। গুলিবর্ষণে সেখানে নিহত হন অন্তত ১৫ জন এবং আহত হন আরও ৪৩ জন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাতভর বিস্ফোরণের শব্দে এলাকা কেঁপে উঠেছে। মানুষজন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঘর ছেড়ে পালিয়েছে, হাসপাতালগুলোতে উপচে পড়ছে আহতদের ভিড়।
ভারতের দাবি, পাকিস্তানে তাদের চালানো হামলায় নিহতের সংখ্যা ৭০ ছাড়িয়েছে, যদিও পাকিস্তান এই সংখ্যা ২৬ বলে নিশ্চিত করেছে। উভয় দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে নিয়ন্ত্রণ রেখায় ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে, যা বড় ধরনের যুদ্ধের পূর্বাভাস দিচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।
এমন উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি জরুরি বৈঠক করে সেনাবাহিনীকে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। পাকিস্তান বলেছে, ভারতের এই পদক্ষেপ যুদ্ধ ঘোষণার সামিল, এবং বিষয়টি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদেও উত্থাপন করা হয়েছে।
কাশ্মীর ঘিরে পুরনো দ্বন্দ্ব আবারও প্রাণঘাতী রূপ নিচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দুই দেশকে সংঘর্ষ এড়িয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছে। তবে বাস্তবতা বলছে—সীমান্তে পরিস্থিতি এখন বারুদের স্তুপের মতো।