
আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন জানিয়েছে, বিডিআর সদর দপ্তরে সংঘটিত ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের পেছনের ঘটনা, উদ্দেশ্য, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং প্রক্রিয়া, সবকিছুই স্পষ্টভাবে উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে। রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান এই প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে জাতির সামনে তুলে ধরেন। এর আগে চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে হস্তান্তর করা হয়।
ঘটনার প্রকৃতি, উদ্দেশ্য ও দায়ী পক্ষ—সবই শনাক্ত
সংবাদ সম্মেলনে কমিশন প্রধান জানান, বিডিআর হত্যাকাণ্ড কেন ঘটেছিল, কারা এর মূল পরিকল্পনাকারী, কারা মাঠপর্যায়ে জড়িত ছিল, কীভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, কেন সেনাবাহিনী তৎক্ষণাৎ অভিযান চালায়নি, এসব প্রশ্নের উত্তর তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি বলেন,
“আমরা হত্যাকাণ্ডের প্রকৃতি, উদ্দেশ্য, সংশ্লিষ্ট সামরিক-বেসামরিক ব্যক্তিদের ভূমিকা—সবই বের করেছি। মিডিয়া, সেনাবাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের কি ভূমিকা ছিল, তা পূর্ণাঙ্গভাবে বিশ্লেষণ করেছি।”
২৪৭ সাক্ষী, হাজারের বেশি নথি—১১ মাসের বিশাল অনুসন্ধান
কমিশন মোট ২৪৭ জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ছিলেন,
শহীদ পরিবারের সদস্য ১৪ জন
রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ১০ জন
সামরিক কর্মকর্তা ১৩০ জন
পুলিশ কর্মকর্তা ২২ জন
বিডিআর/বিজিবির বর্তমান ও সাবেক সদস্য ২২ জন
কারাবন্দী ২৬ জন
বেসামরিক ব্যক্তি ৯ জন
সাংবাদিক ৩ জন
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী ১ জন
তদন্তে ব্যবহৃত হয়েছে:
৬০০ ঘণ্টা ভিডিও রেকর্ডিং ও ট্রান্সক্রিপশন
প্রায় ৮০০টি স্থিরচিত্র
২১৫টি পত্রিকার প্রতিবেদন
৯০৫টি পত্রালাপ
২৭টি প্রতিষ্ঠানের তথ্য উপাত্ত
ফজলুর রহমান জানান, কিছু আন্তর্জাতিক কললিস্ট, বিদেশি নম্বর, টেলিকম কোম্পানির তথ্য পুনরুদ্ধারে বারবার চেষ্টা করতে হয়েছে। কয়েকজনের অবস্থান খুঁজে বের করতে মাসের পর মাস লেগেছে।
“আরও সময় দিলে আরও তথ্য পাওয়া যেত” কমিশনের মন্তব্য
বিলম্বের অভিযোগ প্রসঙ্গে কমিশনের প্রধান বলেন,
“এ ধরনের জটিল ও বহুস্তরীয় ঘটনার তদন্তে এগারো মাস সময় কমই। আরও এগারো মাস পেলেও কম হতো। তবুও কঠোর পরিশ্রমে আমরা রিপোর্ট সম্পন্ন করেছি।”
তিনি আরও জানান, এই প্রতিবেদনে কোনো গোপন শ্রেণিবিন্যাস রাখা হয়নি, অর্থাৎ এটি সম্পূর্ণভাবে জনগণের জন্য উন্মুক্ত।
জাতির প্রতি কমিশনের অর্পণ
মেজর জেনারেল (অব.) ফজলুর রহমান বলেন,
“আমরা সর্বসম্মতভাবে রিপোর্টে স্বাক্ষর করেছি। এটি এখন জনগণের মালিকানাধীন। সত্য উন্মোচনই ছিল আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।”



























