১৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১৮ই শাবান, ১৪৪৬

কোটা বিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হত্যার প্রতিবাদে প্রধানমন্ত্রীর ওপর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে এক নারী শিক্ষার্থীর অগ্নিঝরা কলাম

আওয়ার টাইমস নিউজ।

নিউজ ডেস্ক: চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলা ও হত্যার প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কর্মী সমর্থকরাই ছাত্রলীগ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন, এমন শত শত পোস্ট এখন ফেসবুকে দেয়ালে দেয়াল ভাসছে।

এদিকে কোটা বিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র
আবু সাইদের ছবি, মেহ্জুদা আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী নিজ ফেসবুকের দেয়ালে পোস্ট করে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে প্রতিবাদের শুরে লিখেছেন।

সর্বকালের সর্বশেষ্ঠ বাঙ্গালীর কন্যা হয়ে বাংলার রাজপথকে, কোটা বিরোধী যুক্তিক আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রক্তে রঞ্জিত করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই দুঃখ জাতি কিভাবে নিবে? ছাত্রলীগের কর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের হকি স্টিক দিয়ে মারছে, তাদের মাথা ফাঁটিয়ে দিচ্ছে, নাকে মুখে রক্ত ঝরছে, দলবেঁধে তাদের উপর হামলা করছে। এসব দৃশ্য দেখে দেশে বিদেশে শিক্ষিত অশিক্ষিত ছাত্র সাধারণ মানুষের বুক ভরে যাচ্ছে তীব্র ঘৃণায়। সরকারি আমলাদের এবং সরকারের দীর্ঘদিনের ক্ষমতার অপব্যবহার সকলের সামনে তুলে ধরায় সরকারে আতে ঘাঁ লেগেছে। তাই অধিকার আদায় করতে আন্দোলনে নামা শিক্ষার্থীদের রাজাকার ট্যাগ দিয়ে তাদের উপর চড়াও হয়েছে সরকার ও সরকার সমর্থিত ছাত্রলীগ। সাধারণ ছাত্ররা কোটা সংস্কারের দাবীতে মাঠে নেমেছিল, এটা কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন ছিল না। কেন পুলিশ ও ছাত্রলীগ যৌথভাবে ছাত্রদের উপর হামলা করলো?
সরকার হাইকোর্টে মামলা চলমান দেখিয়ে গা বাঁচানোর অভিনয় করে সুকৌশলে বিষয়টা এড়ানোর চেষ্টা করছিল। এমন কৌশলকে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে বাঁধা দেয়ায় আওয়ামী লীগ সরকার তার ছাত্রলীগকে মাঠে নামিয়ে দিলো। পুলিশ রাস্তা থেকে সাধারণ ছাত্রদের ধরে নিয়ে বন্দী করে কিন্তু অস্ত্র হাতে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কিছুই করছে না।

যে নেত্রীকে ছাত্ররা দেশমাতার খেতাব দিলো তাদের রাজাকারের নাতিপুতির ট্যাগ লাগিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। হঠাৎ দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠের মেধাবী ছাত্ররা রাজাকারের নাতি হয়ে গেলো!

এ কথা স্পষ্ট যে কোটা সংস্কার আন্দোলন মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরোধী আন্দোলন নয়।ছাত্র আন্দোলনের শুরুতে এই বক্তব্য পরিস্কার করে দেয়ার পরও সরকার স্বেচ্ছায় একে মুক্তিযোদ্ধা বিরোধী নাম দিয়ে এ কোন খেলায় মেতে উঠেছে?

রংপুরে পুলিশের সামনে বুক পেতে দেয়া নিরস্ত্র ছাত্র আবু সাইদকে হত্যার দায় ভার কে নিবে? তার হত্যাকারির শাস্তি চায় দেশের সাধারণ ছাত্র ও জনতা। সরকার ছাত্রদের এভাবে দাবিয়ে রাখতে পারবে না।সরকার,ছাত্রলীগ,মন্ত্রীমহল ও চাটুকারী আমলাদের দৌরাত্ম শেষ হতেই হবে।

বড় বড় প্রজেক্টের নামে বিশাল অংকের বৈদেশিক ঋণ, দ্রব্যমূল্যের অনিয়ন্ত্রণ, মুজদদারদের প্রতি উদাসীনতা, বিশাল সংখ্যক বেকারত্ব, ধনী গরিবের বাড়তে থাকা বৈষম্য, সরকারি আমলাদের বিলাশ বহুল জীবন, গরিবের দুবেলা ভাতের জন্য হাহাকার – এতো সবের মাঝে এই ছাত্র হত্যা সরকারের প্রতি জনগণের তীব্র ঘৃণার সৃষ্টি করেছে।

এ ধরনের একটা ন্যাকার জনক ঘটনা দেশবাসি সহজে ভুলবে না, সুদুর ভবিষ্যতে এ আন্দোলন সরকার বিরোধী আন্দোলনে রুপ নিতে পারে৷ যেখানে বিদেশি শক্তি মুখিয়ে আছে যেকোন সময় হস্তক্ষেপ করতে সেখানে সরকারের ছাত্রদের প্রতি এরূপ অন্যায় করা আগুনে ঘি ঢালার মতন হয়ে গেছে। ছাত্র দাবী মেনে নেয়া, ক্ষতিগ্রস্থের ছাত্রদের পাশে দাড়ানো এবং নিহত ছাত্রদের পরিবারে দায়িত্ব নেবার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

ফেসবুক পেজ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

Archive Calendar
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত