আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানলে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১১ জনে দাঁড়িয়েছে। শহরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল দাবানলের গ্রাসে পড়ায় হাজার হাজার মানুষ বাড়িঘর হারিয়েছে। ধ্বংস হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি স্থাপনা। আগুনের বিস্তার রোধে স্থানীয় প্রশাসন ‘রেড ফ্ল্যাগ’ সতর্কতা জারি করেছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের প্যালিসেডস এবং ইটন অঞ্চলে দাবানল সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। শহরের উত্তর-পশ্চিমে প্যালিসেডস ফায়ার প্রায় ৮৬ বর্গকিলোমিটার (৩৩ বর্গমাইল) এলাকা পুড়িয়ে ফেলেছে। আর পূর্বাঞ্চলীয় ইটন ফায়ার ছড়িয়েছে ৫৬ বর্গকিলোমিটার এলাকায়। পাঁচ দিন ধরে সক্রিয় এই দাবানলগুলো শহরের প্রায় ৩৭ হাজার একর এলাকা ধ্বংস করেছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম জানিয়েছেন, পানির ঘাটতির কারণে অগ্নিনির্বাপণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে কিছুটা আশার কথা হলো, প্যালিসেডস ফায়ার ৮ শতাংশ এবং ইটন ফায়ার ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা আকাশ ও মাটি থেকে আগুন নেভানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এই দাবানল লস অ্যাঞ্জেলেসের ইতিহাসে অন্যতম ধ্বংসাত্মক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এর ফলে ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দাবানলের ফলে গাছপালা, বাসস্থান, ও অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই দাবানলকে “যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি” বলে উল্লেখ করেছেন। লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র ক্যারেন বাস জানিয়েছেন, অগ্নিনির্বাপণের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে শক্তিশালী বাতাস এবং শুষ্ক আবহাওয়া পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
আগ্নিকাণ্ডের ফলে হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। বিশেষ করে লস অ্যাঞ্জেলেসের ধনী এলাকাগুলোও এই দাবানলের শিকার হয়েছে, যেখানে বহু সেলিব্রিটির বাড়ি রয়েছে। প্রশাসন স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
এই দাবানল কেবল প্রাণহানি ঘটাচ্ছে না, বরং পুরো অঞ্চলের পরিবেশ ও বাস্তুসংস্থান ধ্বংস করে দিচ্ছে। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও কয়েকদিন সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।