
আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: বিগত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা সরাসরি সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে পরিচালিত হয়েছে—এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে। সংস্থাটির এশিয়া অঞ্চলের প্রধান ইলেইন পিয়ারসন এক বিশেষ বৈঠকে এই তথ্য তুলে ধরেন।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) এইচআরডব্লিউ-এর একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। বৈঠকে তারা “জুলাই বিপ্লব” পরবর্তী মানবাধিকার পরিস্থিতি, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্কার এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোচনা করেন।
এইচআরডব্লিউ-এর পক্ষ থেকে গুম ও হত্যার শিকার হওয়া ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। সংস্থাটি নিরাপত্তা বাহিনীর ভেতরে রাজনৈতিক প্রভাব দূর করার ওপর জোর দেয়।
এইচআরডব্লিউ-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার শাসনামলে নিরাপত্তা বাহিনীকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
এই সময় অনেক বিরোধী নেতা, মানবাধিকার কর্মী ও সাধারণ নাগরিক গুম হয়েছেন বা বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুম ও হত্যাকাণ্ডের পেছনে সরাসরি শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল।
এইচআরডব্লিউ-এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর জড়িত কয়েকজন সদস্য নিশ্চিত করেছেন যে, শেখ হাসিনা নিজেই গুম ও হত্যার সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছেন।
বৈঠকে এইচআরডব্লিউ বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পুনর্গঠনের সুপারিশ করে এবং বলে, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ভেঙে দেওয়া উচিত, কারণ এই বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, “আমরা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জনগণের কাছে স্বচ্ছতা বজায় রাখাই আমাদের অগ্রাধিকার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জনগণ এখন মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার। তারা ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছ শাসনব্যবস্থা চায়।
এইচআরডব্লিউ-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সংস্কার কার্যক্রমকে টেকসই করতে হলে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি নিরাপদ অঞ্চল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।