
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বর্তমানে ইসরায়েলে প্রায় ৪০ হাজার বিদেশি নাগরিক আটকা পড়েছেন। ফ্রান্স, জার্মানি, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার সরকারিভাবে এই নাগরিকদের নিরাপদে জর্ডান ও মিসরের মাধ্যমে সরিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু বিপরীত অবস্থা তৈরি হয়েছে ইসরায়েলিদের জন্য। নিজেদের দেশ থেকে পালাতে চাইলেও তারা পাচ্ছেন না টিকিট, বাধা দিচ্ছে নিজ দেশের সরকার।
ইসরায়েলি পরিবহনমন্ত্রী মিরি রেগেভের নেতৃত্বে বিমান সংস্থাগুলো ইসরায়েলিদের টিকিট বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে। এমনকি ইসরায়েলের প্রধান দৈনিক হারেৎজ-এ লেখা হয়েছে, “ইসরায়েলিরা বিপদের মধ্যে দেশে ফিরতে পারে; কিন্তু বিপদ থেকে পালাতে পারবে না।”
আরেক প্রতিবেদনে হারেৎজ জানায়, চলমান যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি তরুণদের দেশত্যাগের হার তিনগুণ বেড়েছে। দেশজুড়ে এক অস্থির আতঙ্ক বিরাজ করছে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে যারা যুদ্ধবিরোধী এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত।
এই পরিস্থিতি আজ ইতিহাসকে উল্টো করে দিচ্ছে। ১৯৭০-এর দশকে যখন ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে দাবি তুলেছিল, “আমার লোকদের যেতে দাও”— সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে ইহুদি জনগোষ্ঠীকে ইসরায়েলে আনার জন্য, সেই একই কথা আজ ইসরায়েলি নাগরিকদের মুখে— “নেতানিয়াহু, আমার লোকদের যেতে দাও।”
অন্যদিকে গাজায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেও ফিলিস্তিনিরা নিজেদের ভূমি ছাড়তে নারাজ। খাবার, ওষুধ ও চিকিৎসা সেবার মতো ন্যূনতম প্রয়োজনীয়তা থেকেও বঞ্চিত তারা। তবুও অধিকাংশ গাজাবাসী আজও নিজ ভূমিতে ফেরার আকাঙ্ক্ষা ধরে রেখেছেন। হারেৎজ-এর বিশ্লেষণ বলছে, ইসরায়েলের সেই ধারণা ভ্রান্ত যে, ফিলিস্তিনিরা পালিয়ে যাবে কিংবা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
এই ভয়াবহ যুদ্ধ, গণহত্যা ও অস্তিত্বের লড়াইয়ে পার্থক্যটা স্পষ্ট— একটি জাতি মরতে প্রস্তুত তবুও ভূমি ছাড়ে না, আর একটি রাষ্ট্র নিজের নাগরিকদের বলপ্রয়োগে আটকে রাখে।
সূত্র: মিডল ইস্ট আই (লেখক: জোসেফ মাসাদ, অধ্যাপক, কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র