
আওয়ার টাইমস নিউজ।
স্বাস্থ্য: প্রযুক্তির আধুনিক যুগে মোবাইল ফোন ছাড়া দৈনন্দিন জীবন কল্পনা করা কঠিন। তবে অনেকেই অজান্তেই এমন একটি অভ্যাস গড়ে তুলেছেন, যা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুমানোর সময় বালিশের পাশে মোবাইল রাখা দীর্ঘমেয়াদে শরীরের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
গবেষণায় দেখা গেছে, মোবাইল ফোন থেকে নির্গত ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা হ্রাস করতে পারে। বিশেষ করে, দীর্ঘ সময় রেডিয়েশনের সংস্পর্শে থাকলে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এছাড়া, এটি অনিদ্রা, মানসিক চাপ, হৃদরোগের ঝুঁকি এবং এমনকি ক্যানসারের সম্ভাবনাও বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এছাড়াও, দীর্ঘ সময় মোবাইল ফোনের রেডিয়েশনের সংস্পর্শে থাকলে মস্তিষ্কের কোষের স্বাভাবিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে, যা দীর্ঘমেয়াদে স্নায়ুবিক দুর্বলতা তৈরি করতে পারে।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ঘুমের সময় শরীরের খুব কাছে মোবাইল ফোন রাখা হলে হৃদস্পন্দনের ওঠানামা বেড়ে যেতে পারে। এতে উচ্চ রক্তচাপসহ অন্যান্য হৃদরোগের ঝুঁকি তৈরি হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) মোবাইল রেডিয়েশনকে সম্ভাব্য কার্সিনোজেনিক বা ক্যানসারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করেছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণা চলছে, তবে বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোবাইল ফোনের স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলো ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মেলাটোনিন হরমোনের নিঃসরণ কমিয়ে দেয়। ফলে পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার পাশাপাশি মানসিক অবসাদও বাড়তে পারে।
সতর্কতা: কী করবেন?
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘুমের সময় মোবাইল ফোন বালিশের পাশে না রেখে অন্তত কয়েক ফুট দূরে রাখা উচিত। সম্ভব হলে ‘এয়ারপ্লেন মোড’ চালু করে ঘুমালে রেডিয়েশন কমতে পারে। এছাড়া, রাতের বেলা অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের পরিবর্তে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হলেও এর ব্যবহারে সচেতন না হলে এটি স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। তাই ঘুমের সময় এই অভ্যাস পরিবর্তন করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।