
আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের রায় আজ ঘোষণা করা হচ্ছে। বহুল আলোচিত এই মামলার রায়ের অপেক্ষায় গোটা জাতি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সকাল ১১টায় বসে রায় ঘোষণা করবে।
বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এই রায়ের প্রতি নজর রয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে সরকারের সর্বোচ্চ পদধারী ব্যক্তিদের বিচার বাংলাদেশের ইতিহাসে এ প্রথম। রায় বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ সব গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে এবং রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে বড় পর্দায় দেখানো হবে।
হাসিনার বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে রয়েছে বিক্ষোভ দমনে হত্যার নির্দেশ, আবু সাঈদ হত্যা, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বলপ্রয়োগ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে উসকানি। তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয় এবং আহত হয় প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। এছাড়া পাঁচ আগস্ট চাঁনখারপুলে ছয় জনকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় লাশ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনাও মামলার অন্তর্ভুক্ত।
এ মামলায় মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার অভিযোগনামা দাখিল করা হয়েছে যেখানে রয়েছে তথ্যসূত্র, জব্দ তালিকা এবং শহীদদের তালিকা। ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়। রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
রায়কে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জোরদার করা হয়েছে। সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মাঠে রয়েছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের লকডাউন ও নাশকতা ঠেকাতে নেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
রাষ্ট্রপক্ষ আশা করছে, এই মামলায় আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে। প্রসিকিউটরদের মতে, নারী হওয়ায় হাসিনা কোনো বিশেষ অনুকম্পা পাবেন না কারণ আইনে রায়ের ক্ষেত্রে লিঙ্গভিত্তিক সুবিধার বিধান নেই। অপরাধ প্রমাণিত হলে সাজা এবং সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ভুক্তভোগীদের দেওয়ার প্রস্তাবনাও তুলে ধরা হয়েছে।
আজকের এই রায় বাংলাদেশের বিচার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আইনজ্ঞরা মনে করছেন।


























