
আওয়ার টাইমস নিউজ।
ইসলামী ডেস্ক: ইসলাম শিখিয়েছে, আল্লাহ তায়ালা মাঝে মাঝে মানুষকে সতর্ক করার জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ পাঠান। এর মধ্যে ভূমিকম্প হলো একটি শক্তিশালী নিদর্শন, যা মানুষকে তাদের ভুলত্রুটি ও পাপ থেকে ফিরে আসার জন্য সতর্ক করে। ইতিহাসে আল্লাহ কিছু জাতিকে ভয়ংকর ভূমিকম্পের মাধ্যমে ধ্বংস করেছেন। সবচেয়ে সুপরিচিত উদাহরণ হলো হজরত লূত আলাইহিস সালামের (আ.) সম্প্রদায়।
হজরত লূত (আ.) এর জাতি: সমকামীতার কারণে ধ্বংস
কোরআনে বর্ণিত, হজরত লূত (আ.) এর জাতি তাদের শহরে চরম অশ্লীলতা ও বিকৃত কামপ্রবৃত্তি করত। তারা মানুষের স্বাভাবিক প্রাকৃতিক রুচি অমান্য করে পুরুষদের প্রতি কামপ্রবৃত্তি প্রকাশ করত।
আল্লাহ তায়ালা বলেন:
‘তোমরা চরম অশ্লীলতা করছো যা তোমাদের আগে সারা পৃথিবীতে কেউ করেনি। তোমরা কামপ্রবৃত্তি পূরণ করার জন্য মেয়েদের না গিয়ে পুরুষের কাছে যাচ্ছ। সুরা আ‘রাফ, ৮০–৮১
লূত (আ.) বারবার তাদের সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেন, এ ধরনের আচরণ পাপ এবং আল্লাহর নিন্দিত। কিন্তু তারা নবীর কথাকে উপেক্ষা করে এবং আরও গভীরভাবে পাপাচারে লিপ্ত হয়। এমনকি লূত (আ.) এর স্ত্রীও তাদের সহযোগিতা করেছিল।
আল্লাহর শাস্তি ও ধ্বংস
কোরআন ও তাফসিরে বর্ণিত, আল্লাহর আদেশে ভোরবেলায় এই জাতির ওপর ভয়ংকর ভূমিকম্প আনা হয়। পুরো নগর উল্টে যায় এবং উপরে থেকে পাথর বর্ষণ করা হয়। কেউ রেহাই পায়নি, এমনকি যারা বাইরে ছিল তাদের উপরও ধ্বংস নামে।
আল্লাহ বলেন:
ফলস্মা যায় যখন আমার আদেশ এল, আমি তাদের নগরকে উপুর করে দিলাম এবং তাদের ওপর স্তরে স্তরে পাথর বর্ষণ করলাম। সুরা হুদ, ৮২
ফেরেশতাগণ হজরত লূত (আ.) কে নিরাপদে বের করে দেন এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত নগরের ধ্বংসাবশেষ তার ওপর নেমে আসে।
পাঠকের জন্য শিক্ষা
সমাজে পাপাচার ও অবাধ্যতা বৃদ্ধি পেলে আল্লাহর শাস্তি আসে।
বিপদের সময় আল্লাহর কাছে ফিরে আসা, তাওবা করা ও দোয়া করা আবশ্যক।
প্রাকৃতিক দুর্যোগও মানুষের জন্য সতর্কবার্তা ও শিক্ষা বহন করে।
আরবি কোরআন ও হাদিসের উদ্ধৃতি
কোরআন:
يَا قَوْمِ أَفْسَدْتُمْ فِي الْأَرْضِ وَمَا كَانَ أَفْسَادُكُمْ سَابِقِينَكُمْ
(সুরা আ‘রাফ, ৮০–৮১)
অর্থ: হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা পৃথিবীতে চরম فساد ও অশ্লীলতা করছো যা তোমাদের পূর্ববর্তী কেউ করেনি।
হাদিস: রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
এই উম্মত ভূমিকম্প, বিকৃতি ও পাথরবর্ষণের সম্মুখীন হবে।
(তিরমিজি: ২২১২)




























