
আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: ঢাকায় দেশের বিভিন্ন মসজিদের ইমাম–খতিবদের নিয়ে আগারগাঁওয়ের চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বৃহৎ পরিসরে অনুষ্ঠিত হয়েছে সম্মিলিত ইমাম–খতিব জাতীয় সম্মেলন ২০২৫।
ইমাম–খতিবদের ধর্মীয় দায়িত্ব স্বাধীনভাবে পালন, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা নিশ্চিত করা এবং সাত দফা ন্যায্য দাবি উত্থাপনের লক্ষ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাকী, এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মুফতি আজহারুল ইসলাম ও মুফতি শরিফুল্লাহ।
সম্মেলনে প্রধান বক্তারা ছিলেন,
হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, জমিয়তের সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীসহ দেশের শীর্ষ আলেমসমাজ।
উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী, পটিয়া, মধুপুর, বাইতুল মোকাররমসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রসিদ্ধ আলেমগণ।
উপস্থাপিত সাত দফা দাবিনামা
১. রাষ্ট্র পরিচালনায় ইসলামী শরিয়াহের সর্বোচ্চ গুরুত্ব
সব ধর্মের অধিকার সংরক্ষণ করে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ইসলামী শরিয়াহকে সর্বোচ্চ স্থান দিতে হবে।
২. রাষ্ট্রীয় জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে ইমাম–খতিবদের সম্পৃক্তকরণ
জেলা–উপজেলা–থানা পর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা কমিটি, গ্রাম আদালত, দুর্যোগ কমিটি ও ইউনিয়নভিত্তিক বিভিন্ন সেবা কার্যক্রমে ইমামদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৩. বিদ্যুৎ ও পানির বিলে বিশেষ সুবিধা
মাদরাসার বিদ্যুৎ বিলকে মসজিদের মতো D-ট্যারিফে আনা এবং সব মসজিদ–মাদরাসার পানি বিল ৫০ শতাংশ মওকুফ করার দাবি জানানো হয়।
৪. ইমাম–খতিব, মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের চাকরি বিধি প্রণয়ন
দেশব্যাপী সব মসজিদের জন্য পৃথক চাকরি বিধি এবং মসজিদ কমিটিতে ইমাম–খতিবকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়ার বিধান করতে হবে।
৫. অনিয়ন্ত্রিত গ্রেফতার ও হয়রানি নিষিদ্ধকরণ
সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া কোনো আলেম বা ইমাম–খতিবকে গ্রেফতার–হয়রানি না করার দাবি উত্থাপন করা হয়।
৬. নিয়োগে যোগ্য আলেমদের অগ্রাধিকার
দাওরায়ে হাদিসসহ স্বীকৃত সনদধারী আলেমদের সরকারি মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ধর্মীয় শিক্ষক ও কাজি নিয়োগে অগ্রাধিকার প্রদানের দাবি জানানো হয়।
৭. ওয়াকফ ও শিক্ষানীতিতে শরিয়াহসম্মত সংস্কার
ওয়াকফ প্রশাসন আইনকে শরিয়াহসম্মতভাবে সংস্কার এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম কমিটি, পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন কমিটি ও শিক্ষা কমিশনে যোগ্য আলেমদের সম্পৃক্ত করার দাবি জানানো হয়।
আরো যারা উপস্থিত ছিলেন
হাফেজ মাওলানা আব্দুর হক, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, শাহ আবু নছর নেছারুদ্দীন আহমাদ হুসাইন, মাওলানা আব্দুল হাই নদভীসহ শীর্ষস্থানীয় বহু আলেম; এছাড়াও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ছিলেন নাহিদ ইসলাম, নুরুল হক নূর, মজিবুর রহমান মঞ্জু, ববি হাজ্জাজ, আন্দালিব রহমান পার্থ।
সম্মেলন বাস্তবায়নে যাঁরা ছিলেন
মুফতি মুহিব্বুল্লাহিল বাকী নদভী (আহ্বায়ক), মুফতি আজহারুল ইসলাম (সদস্য সচিব), এবং কমিটির অন্যান্য সদস্য:
মুফতি আবদুল মালেক, মুফতি দেলোয়ার হোসাইন, ড. জয়নুল হক খান, মাওলানা জিয়াউল করিম মাহমুদ, মুফতি শাব্বির আহমাদ মঞ্জিলী, মুফতি শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
আয়োজকরা বলেন, সাত দফা দাবির এই ঘোষণার মাধ্যমে ইমাম–খতিব সমাজের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলন নতুন গতিপথ পাবে এবং সরকার দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে বলে তাঁরা আশা করেন।



























